সালোকসংশ্লেষের আলোক দশা
Contents
সালোকসংশ্লেষের আলোক দশা

সালোকসংশ্লেষের আলোক নির্ভর যে দশায় ক্লোরোপ্লাস্টের ভেতর থাইলাকয়েড অংশে জারণ প্রক্রিয়াটি ঘটে তাকে আলোক দশা বলে ।
সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার আলোক দশাটি ক্লোরোপ্লাস্টের গ্রানাতে সংঘটিত হয় ।
আলোক দশায় নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো , জল এবং ক্লোরোফিল প্রয়োজন এবং বিক্রিয়া শেষে ATP , NADPH + H+ এবং O2 উৎপন্ন হয় ।
আলোক দশায় অনুষ্ঠিত বিক্রিয়াগুলি এবং বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী বিক্রিয়ক ও বিক্রিয়ালব্ধ পদার্থগুলির অণুর পরিমাণ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এক অণু গ্লুকোজ উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে নিম্নে উল্লেখ করা হল—
ক্লোরোফিলের সক্রিয়তা :
এই দশার প্রথমে সূর্যালোকের ফোটন কণা গ্রহণ করে ক্লোরোফিল সক্রিয় তেজোময় হয় এবং ইলেকট্রন ত্যাগ করে ক্লোরোফিল জারিত হয় ।
জলের আলোক বিয়োজন ও অক্সিজেন নির্গমন :
জারিত ক্লোরোফিল নিজ ইলেকট্রন শূন্যতা পূরণ করার জন্য জল থেকে ইলেকট্রন গ্রহণ করে বিজারিত হয় এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে । এই কারণে জল বিশ্লিষ্ট হয়ে প্রোটন অর্থাৎ হাইড্রোজেন আয়ন এবং অক্সিজেন উৎপন্ন করে । আলোর উপস্থিতিতে ক্লোরোফিল দ্বারা এই প্রকার জল বিশ্লেষণকে ফটোলাইসিস বা আলোক বিশ্লেষণ বলে ।
12H2O → 24H+ + 24e- + 6O2
বিজারিত NADP গঠন :
হাইড্রোজেন আয়ন ( H+ ) এবং ক্লোরোফিল থেকে নির্গত e- এর উপস্থিতিতে উদ্ভিদ কোশে উপস্থিত হাইড্রোজেন গ্রাহক NADP+ বিজারিত হয়ে NADPH + H+ গঠন করে ।
12NADP + 24e- + 24H+ → 12( NADPH + H+ )
ফসফোরাইলেশন :
ক্লোরোফিল থেকে নির্গত ইলেকট্রন ( e- ) বিভিন্ন বাহকের মাধ্যমে বাহিত হওয়ার সময় যে শক্তি নির্গত করে তার প্রভাবে অ্যাডিনোসিন ডাই ফসফেটের ( ADP ) সঙ্গে অজৈব ফসফেট ( Pi ) যুক্ত হয়ে অ্যাডিনোসিন ট্রাই ফসফেট ( ATP ) উৎপন্ন করে । আলোক শক্তির সাহায্যে এইভাবে ADP এবং অজৈব ফসফেট ( Pi ) যুক্ত হয়ে ATP উৎপন্ন হওয়াকে ফটো ফসফোরাইলেশন বলে ।
18ADP + 18Pi → 18ATP
সালোকসংশ্লেষের আলোক দশার তাৎপর্য
আলোক দশার তাৎপর্যগুলি হলো —
( i ) আলোক শক্তি ক্লোরোফিল শোষণ করে এবং ওই আলোক শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয় ।
( ii ) এই দশায় আলোক জলের বিশ্লেষণ ঘটায় , ফলে O2 উৎপন্ন হয় ।
( iii ) আলোক দশায় উৎপন্ন NADPH + H+ ও ATP অন্ধকার দশা আরম্ভ করতে ও CO2 এর বিজারণ করতে ব্যবহৃত হয় ।
আরো পড়ুন : সবুজ পাতা সালোকসংশ্লেষের আদর্শ স্থান কেন