শ্বাস অঙ্গ কাকে বলে
Contents
শ্বাস অঙ্গ কাকে বলে
যে অঙ্গের মাধ্যমে জীবদেহে শ্বসন প্রক্রিয়ার জন্য পরিবেশ থেকে গৃহীত অক্সিজেন এবং শ্বসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোশীয় শ্বসন বস্তুর জারণে উৎপন্ন কার্বন ডাই অক্সাইড এর আদান প্রদান হয় , তাকে শ্বাস অঙ্গ বলে ।
শ্বাস অঙ্গের বৈশিষ্ট্য
নির্দিষ্ট শ্রেণির প্রাণীর নির্দিষ্ট শ্বাস অঙ্গ দেখা গেলেও প্রতিটি শ্বাস অঙ্গের নির্দিষ্ট কতকগুলি বৈশিষ্ট্য আছে , বৈশিষ্ট্য গুলি হল—
( i ) শ্বাস অঙ্গগুলি প্রশস্ত , সিক্ত , অর্ধভেদ্য , ব্যাপনক্ষম হয় ।
( ii ) শ্বাস অঙ্গগুলিতে বেশি মাত্রায় রক্তজালক বর্তমান ।
( iii ) শ্বাস অঙ্গের উপরিতলের ( শ্বসন তল ) আয়তন সাধারণত বেশি হয় । উদ্ভিদদেহে প্রাণীদের মত সুনির্দিষ্ট কোনো শ্বাস অঙ্গ নেই , সাধারণত পত্ররন্ধ্র এবং লেন্টিসেলের মাধ্যমেই উদ্ভিদ তাদের শ্বাসকার্য সম্পন্ন করে । এছাড়া লবণাম্বু উদ্ভিদ ( যথা – সুন্দরী , গরান ) শ্বাসমূলের সাহায্যে শ্বাসকার্য সম্পন্ন করে ।
উদ্ভিদের বিভিন্ন শ্বাস অঙ্গ
পত্ররন্ধ্র : যে অসংখ্য ছিদ্র উদ্ভিদের পাতার ত্বকে থাকে তাকে পত্ররন্ধ্র বা স্টোমাটা বলে । সমাঙ্কপৃষ্ট পাতার উভয় ত্বকে এবং বিষমপৃষ্ট পাতার নিম্নত্বকে পত্ররন্ধ্র থাকে । প্রতিটি পত্ররন্ধ্র রক্ষীকোশ দিয়ে ঘেরা থাকে । রক্ষীকোশগুলি পত্ররন্ধ্রকে খুলতে এবং বন্ধ হতে সাহায্য করে । উদ্ভিদের গ্যাসীয় আদান প্রদান এবং বাষ্পমোচন পত্ররন্ধ্রের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় ।
লেন্টিসেল : যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্রের ন্যায় উঁচু ফাটল গুল্ম ও বৃক্ষ জাতীয় গাছের পরিণত কাণ্ডে দেখা যায় তাদের লেন্টিসেল বলে । শ্বাস অঙ্গরূপে লেন্টিসেল উদ্ভিদের গ্যাসীয় আদানপ্রদানে সাহায্য করে ।
শ্বাসমূল : লবণাম্বু উদ্ভিদ ( যথা : সুন্দরী , গরান ) লবণাক্ত ও কর্দমাক্ত মাটিতে জন্মায় । এই প্রকার মাটিতে O2 এর পরিমাণ কম থাকায় লবণাম্বু উদ্ভিদের মূলের শাখা বায়ু থেকে O2 নেওয়ার জন্য মাটি ভেদ করে খাড়াভাবে মাটির উপরে উঠে আসে । এই মূলগুলিকে শাখা মূল বলে । এই প্রকার মূলের ত্বকে অসংখ্য ছিদ্র থাকে , যাকে শ্বাস ছিদ্র বা শ্বাসরন্ধ্র বলে । এই সকল ছিদ্রের মাধ্যমে উদ্ভিদ বায়ু থেকে O2 সংগ্রহ করে ।
বিভিন্ন প্রাণীর শ্বাস অঙ্গ
বিভিন্ন প্রাণীর শ্বাস অঙ্গ গুলি হল 一
প্রাণী | শ্বাস অঙ্গ |
অ্যামিবা / হাইড্রা | সমগ্ৰ দেহতল |
ব্যাঙাচি | বহিঃ ফুলকা |
প্যারামোসিয়াম | কোষপর্দা |
মাকড়সা / কাঁকড়াবিছা | পুস্তক ফুসফুস |
উভচর ব্যাঙ | ফুসফুস , ভিজা চামড়া , মুখবিহ্বর , গলবিলীয় মিউকাস পর্দা |
আরশোলা / মৌমাছি / প্রজাপতি / ফড়িং / পতঙ্গ | ট্রাকিয়া ও দশজোড়া শ্বাসছিদ্র |
কই / মাগুর / শিঙি ইত্যাদি মাছ | ফুলকা ও অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র |
টিকটিকি / গিরগিটি / সরীসৃপ / কচ্ছপ / স্তন্যপায়ী / মানুষ / গিনিপিগ / তিমি | ফুসফুস |
কেঁচো / জোঁক | দেহত্বক |
পাখি / পায়রা | ফুসফুস ও বায়ুথলি |
মাছ / চিংড়ি / শামুক | ফুলকা |
সমুদ্রশসা | রেসপিরেটরি টি |
আরো পড়ুন : শ্বাসমূল কাকে বলে