ব্রান্সউইক ঘোষণা 

ব্রান্সউইক ঘোষণা 

১৭৯২ খিষ্টাব্দের জুলাই মাসে অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার নেতৃত্বে ইউরোপের কয়েকটি দেশ ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। সেই সময়ে অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার রাজাদের নির্দেশ মতো প্রাশিয়ার সেনাধ্যক্ষ ডিউক অব বান্সউইক এক ঘোষণা জারি করেন । এটাই বান্সউইক মেনিফেস্টো বা ঘোষণা পত্র নামে পরিচিত ।

প্রাশিয়ার সৈন্যাধ্যক্ষ ব্রান্সউইক এই ঘোষণা দ্বারা জানালেন ফরাসী রাজপরিবারের কোন সদস্যের সামান্যতম ক্ষতি হলে ফ্রান্সকে ধূলিস্যাৎ করা হবে । এই ঘোষণা প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত করে তুলল জনতাকে । ‘ বিপ্লবী কমিউন ’ এর নেতৃত্বে বিশাল ক্ষিপ্ত জনতা আক্রমণ করল টুইলারিস রাজপ্রাসাদ ( ১০ ই আগষ্ট ১৭৯২ ) । ভীত সন্ত্রস্ত রাজা ও রানী প্রাণভয়ে আশ্রয় নিলেন আইনসভা কক্ষে । জনতার চাপে আইনসভা রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করে টেম্পল দুর্গে বন্দী করল । জনতার এই অভ্যুত্থান দ্বিতীয় ফরাসি বিপ্লব নামে খ্যাত । 

রাজভক্ত ও দেশদ্রোহী সন্দেহে বহু লোককে বন্দী করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয় । কিন্তু উগ্র ও উন্মত্ত প্যারিসের জনতা কারাগারে ঢুকে কয়েক হাজার বন্দীকে হত্যা করে । চারদিন ধরে চলে ( ২-৫ সেপ্টেম্বর , ১৭৯২ খ্রীঃ ) এই নিধন যজ্ঞ । ইতিহাসে এই ঘটনা ‘ সেপ্টেম্বরের হত্যাকাণ্ড ‘ নামে অভিহিত হয় । 

দ্বিতীয় ফরাসী বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং প্রজাতন্ত্র স্থাপিত হয় । ১৭৯১ খ্রীঃ এর সংবিধান বাতিল হয়ে যায় । সম্পত্তি ভিত্তিক ভোটাধিকারের পরিবর্তে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার স্বীকৃত হয় । স্থির হয় , প্রাপ্তবয়স্কের ভোটধিকারের ভিত্তিতে গঠিত হবে ‘ ন্যাশনাল কনভেনশন ‘ , যা পরবর্তী শাসন কাঠামো স্থির করবে । 

আরো পড়ুন : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ গুলি আলোচনা করো

ফরাসি বিপ্লবের ফলাফল আলোচনা কর

ডিরোজিও ও নব্য বঙ্গ বা ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলন

error: Content is protected !!