বর্ণ ব্যবস্থা কী

বর্ণ ব্যবস্থা কী

ভারতে প্রবেশকালে আর্যরা যোদ্ধা বা রাজন্য , ব্রাহ্মণ বা পুরোহিত ও সাধারণ আর্য — এই তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল । তখনও তাদের মধ্যে বর্ণ বা জাতিভেদ প্রথার উদ্ভব হয়নি । তখন শ্বেতকায় আর্য ও কৃষ্ণকায় অনার্যদের মধ্যে গাত্রবর্ণের ভিন্নতা বোঝাতে ‘ বর্ণভেদ ’ শব্দটি ব্যবহৃত হত ; কালক্রমে গুণ ও কর্মের ভিত্তিতে তাদের মধ্যে চারটি বর্ণের উদ্ভব হয় । যথা —

 ( i ) ব্রাহ্মণ — যাগযজ্ঞ ও অধ্যয়ন অধ্যাপনা ছিল ব্রাহ্মণদের বৃত্তি ; 

( ii ) ক্ষত্রিয় — ক্ষত্রিয়রা রাজ কাজ , রাজ্য শাসন ও যুদ্ধ কর্মে নিযুক্ত ছিল ; 

( iii ) বৈশ্য — এই বর্ণভুক্ত মানুষের বৃত্তি ছিল কৃষিকাজ , পশুপালন ও ব্যাবসা বাণিজ্য ; 

( iv ) শূদ্র — ব্রাহ্মণ , ক্ষত্রিয় , বৈশ্য এই তিন বর্ণের সেবা ও দাসত্বের কাজে নিযুক্ত ছিল শূদ্ররা ; আর্যরা তাদের সমাজ কাঠামোর একেবারে নীচের সারিতে ঠাঁই দিয়েছিল এই অনার্যদের । 

ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত পুরুষ সুক্তের দ্বাদশ ঋক বা মন্ত্রে চার বর্ণের উল্লেখ প্রথম পাওয়া যায় । সেখানে বলা হয়েছে আদি পুরুষ ব্রহ্মার মুখ থেকে ব্রাহ্মণ , বাহু থেকে ক্ষত্রিয় , উরুদেশ থেকে বৈশ্য এবং পা দুটি থেকে শূদ্রের জন্ম হয়েছে । 

পুরুষ সুক্তটি ঋগ্বেদের সর্বশেষ সংযোজন হওয়ায় ঐতিহাসিকদের অনুমান যে , ঋগ্বৈদিক যুগের শেষ পর্বে আর্য সমাজে চতুর্বর্ণ প্রথার উদ্ভব হয়েছিল । অনেকের মতে অবশ্য পুরুষসুক্তটি প্রক্ষিপ্ত অর্থাৎ ঋকবৈদিক যুগেরই নয় , আরও পরবর্তীকালের রচনা । 

আরো পড়ুন : ঋক বৈদিক যুগের প্রধান দেবদেবী

ঋক বৈদিক সমাজে নারীর স্থান

error: Content is protected !!