বৈদিক সাহিত্য বলতে কী বোঝো

বৈদিক সাহিত্য বলতে কী বোঝো

বেদের শ্রেণিবিভাগ

বেদ প্রধানত চার ভাগে বিভক্ত । যথা — ঋক , সাম , যজু ও অথর্ব । 

( i ) ঋকবেদ : এটি প্রাচীনতম বেদ । প্রকৃতির বর্ণনা ও দেবদেবীর স্তুতি গান এর বিষয়বস্তু । 

( ii ) সামবেদ : সামবেদের স্তোত্রগুলির অধিকাংশই ঋগ্বেদ থেকে সংকলিত , যজ্ঞের সময় এই স্তোত্রগুলি সুর করে গাওয়া হত , তাই এগুলি সামগান নামে পরিচিত ।  

( iii ) যজুর্বেদ : এতে আছে যাগযজ্ঞের মন্ত্রসমূহ । 

( iv ) অথর্ববেদ : এই বেদে সন্নিবিষ্ট হয়েছে জাগতিক সৃষ্টি রহস্য , চিকিৎসাবিদ্যা ও বশীকরণ মন্ত্ৰাদি । 

প্রতিটি বেদের আবার চারটি অংশ । যথা— 

( i ) সংহিতা : সংহিতায় আছে আগাগোড়া পদ্যে রচিত দেবদেবীর স্তুতিগান ও যজ্ঞের মন্ত্রাদি । ঋকবেদ সংহিতায় ১০২৮ টি স্তোত্র আছে ।

( ii ) ব্রাহ্মণ : ব্রাহ্মণ অংশে রয়েছে গদ্যে লিখিত যাগযজ্ঞের বিধি , প্রকরণ ও মন্ত্রগুলির টীকা । 

( iii ) আরণ্যক : গার্হস্থ্য আশ্রমের শেষে বানপ্রস্থ অবলম্বনকারী আর্যদের ধর্ম চিন্তার কথা আরণ্যকে আলোচিত হয়েছে । 

( iv ) উপনিষদ বা বেদান্ত : উপনিষদ আরণ্যকের পরিশিষ্ট । এতে আছে কর্মফল , জন্মান্তরবাদ , আত্মা , ব্রয় বা জীবাত্মা ও পরমাত্মা সম্বন্ধীয় দার্শনিক তত্ত্ব । 

সূত্র সাহিত্য 

বেদের নির্ভুল পাঠ , নিয়মরীতি মেনে যাগযজ্ঞের সুষ্ঠু সম্পাদন এবং বৈদিক সাহিত্যের মূলতত্ত্ব সংক্ষেপে ও নির্ভুলভাবে বোঝার জন্য রচিত হয় সূত্র সাহিত্য ; এর দুটি অংশ— ( 1 ) বেদাঙ্গ ও ( ii ) ষড়দর্শন । 

( 1 ) বেদাঙ্গ — বেদ পাঠের জন্য যে ছটি বিদ্যার প্রয়োজন তাই বেদাঙ্গ । এগুলি হল – ( a ) শিক্ষা , ( b ) ছন্দ , ( c ) ব্যাকরণ , ( d ) নিরুক্ত , ( e ) জ্যোতিষ , ( f ) কল্প । 

( ii ) ষড়দর্শন — উপনিষদের তত্ত্বগুলির আলোচনা ও ব্যাখ্যা থেকে ষড়দর্শনের উদ্ভব ; ছটি দর্শন হল – ( a ) কপিলের সাংখ্য দর্শন , ( b ) পতঞ্জলির যোগ দর্শন , ( c ) গৌতমের ন্যায় দর্শন , ( d ) কণাদের বৈশেষিক দর্শন , ( e ) জৈমিনীর পূর্ব মীমাংসা এবং ( f ) বেদব্যাসের উত্তর মীমাংসা ।

আরো পড়ুন : বেদ কয় প্রকার ও কি কি

বেদকে শ্রুতি বলা হয় কেন

error: Content is protected !!