ইতিহাস

অষ্টাঙ্গিক মার্গ

অষ্টাঙ্গিক মার্গ 

গৌতম বুদ্ধ উপলব্ধি করেছিলেন মানুষ জন্মগ্রহণ করে বলেই তার মধ্যে কামনা , বাসনা , মোহ ও আসক্তির জন্ম হয় — এগুলিই মানুষের দুঃখের কারণ । দুঃখ থেকে মুক্তি পেতে গেলে এই রিপুগুলির বিনাশ প্রয়োজন । গৌতম বুদ্ধ তাই কামনা , বাসনা , মোহ ও আসক্তির বিনাশে এবং নির্বাণ বা মোক্ষ লাভের জন্য আটটি পথ অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন , যেগুলি একত্রে অষ্টাঙ্গিক মার্গ নামে পরিচিত । সেগুলি হল — সৎ চেতনা , সৎ সংকল্প , সৎ বাক্য , সৎ কর্ম , সৎ জীবিকা , সৎ প্রচেষ্টা , সৎ স্মৃতিসৎ সমাধি

আরো পড়ুন : গৌতম বুদ্ধের জীবনী ও বাণী

ডি. ডি. কোশাম্বী  অষ্টাঙ্গিক মার্গকে সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করেছেন । তাঁর মতেㅡ

সৎ বাক্য ‘ বলতে বোঝায় এমন কথা না বলা যার ফলে সমাজ বা অন্য কারও কোনো ক্ষতি হয় । 

সৎ কর্ম ‘ হল সমাজের কল্যাণে কাজ করা এবং অহিংসা মেনে চলা ; 

সৎ জীবিকা ’ হল অন্যের ক্ষতি না করে নিজের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করা ; 

‘ সৎ প্রচেষ্টা ‘ হল অন্যের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে নিজের উন্নতি করা ; 

সৎ চিন্তা ’ হল মন থেকে কুচিন্তা দূর করা ; 

সৎ চেতনা ‘ হল দেহ ও মনের পবিত্রতা বজায় রাখা ; 

সৎ সংকল্প ’ হল অন্যের ক্ষতি না করে নিজের উন্নতির সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং 

সৎ সমাধি ’ হল সত্য , প্রেম ও অহিংসাকে সর্বদা মনে ধ্যান করা । 

তিনি আরও বলেছেন , বুদ্ধদেব সামাজিক অসাম্য ও বিরোধ নাশ করে মানুষের সঙ্গে মানুষের সখ্য ও সহনশীলতা বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট ছিলেন । বস্তুতই বুদ্ধদেব প্রচারিত অষ্টাঙ্গিক মার্গ জটিল দর্শন তত্ত্ব দ্বারা আচ্ছন্ন ছিল না । এগুলির মূল লক্ষ্য ছিল নৈতিক মূল্যবোধ জাগিয়ে সামাজিক উত্তেজনা ও অস্থিরতা দূর করা । 

আরো পড়ুন : হীনযান ও মহাযান এর পার্থক্য

মহাত্মা গান্ধী প্রবর্তিত সত্যাগ্রহের আদর্শ কী

গৌতম বুদ্ধের ধর্মমত

যোগ (হিন্দুধর্ম) বলতে কি বোঝো

error: Content is protected !!