অনুবিস্তার কাকে বলে
অনুবিস্তার কাকে বলে
কোশ , কলা বা অঙ্গ পালন প্রকৌশল ( Plant breeding ) দ্বারা একাধিক উদ্ভিদ প্রজাতির বংশ বিস্তার ঘটানো সম্ভব , এই পদ্ধতিকে অণুবিস্তারণ বা মাইক্রোপ্রোপাগেশন ( Micropropagation ) বলে ।

অণুবিস্তারণের সুবিধা ( Advantages of micropropagation )
i. উন্নত বৈশিষ্ট্য যুক্ত উদ্ভিদ ক্লোনের দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের স্থায়িত্ব বজায় রাখা ।
ii. রোগ মুক্ত উদ্ভিদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা ।
iii. বীজহীন ফল যুক্ত ( parthenocarpic fruit ) উদ্ভিদের বংশ বিস্তার ঘটানো ।
iv. সংকরায়ণের ফলে সৃষ্ট বন্ধ্যা উদ্ভিদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা ।
v. বৃদ্ধি ও বিকাশের বিভিন্ন দশার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ।
vii. বৎসরের সব সময় স্বল্প পরিসরে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় ক্লোন তৈরি করা যায় ।
vii. গুরুত্বপূর্ণ জার্মপ্লাজম দীর্ঘস্থায়ীরূপে সংরক্ষণ করা যায় ।
viii. স্বল্প পরিমাণ কলা থেকে অসংখ্য উদ্ভিদ সৃষ্টি করা যায় ।
ix. এই পদ্ধতি উদ্ভিদের আন্তর্জাতিক বিনিময়ের সুযোগ বৃদ্ধি করেছে ।
মাইক্রোপ্রোপাগেশন এর পর্যায় ( Steps of micropropagation )
বিজ্ঞানী মুরাসিগে’র ( Murashige , 1974 ) মতে অণু বিস্তারণের প্রধান পর্যায়গুলি হল—
1. মাতৃ উদ্ভিদ নির্বাচন ও এক্সপ্লান্টের নির্বীজন ( Selection of parent plant and sterilisation of explant ) :
সুস্থ ও পছন্দসই উদ্ভিদ নির্বাচন করে তা থেকে বিটপ্লাগ বা কাক্ষিক মুকুল ( explant ) পৃথক করে নির্বীজন করা হয় । সাধারণত লঘু হাইপোক্লোরাইড দ্রবণ বা 70% অ্যালকোহল নির্বীজনের জন্য ব্যবহার করা হয় ।
2. কলাকর্ষক মাধ্যমে এক্সপ্লান্টের স্থানান্তর ( Transfer of explant in culture medium ) :
নির্বীজিত এক্সপ্লান্ট উপযুক্ত কর্ষণ মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয় । নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় উপযুক্ত মাধ্যমে এক্সপ্লান্টের কোশগুলি বিভাজিত হয়ে অসংগঠিত ও অবিভেজি কলার সৃষ্টি করে , একে ক্যালাস টিস্যু ( callustissue ) বলে।
3. অনুশীলন মাধ্যমে বিটপের সৃষ্টি ( Shoot formation in culture medium ) :
বৃদ্ধিরত ক্যালাস টিস্যুর অংশ বিশেষ হরমোন যুক্ত ( সাধারণত সাইটোকাইনিন ) পুষ্টি মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয় । উদ্ভিদ কোশের টোটিপোটেন্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য কর্ষণ মাধ্যমে বিটপের সৃষ্টি হয় ।
4. মূল সৃষ্টিকারী মাধ্যমে বিটপের স্থানান্তর ( Transfer of shoots in root initiating medium ) :
বর্ধনশীল বিটপগুলিকে পুনরায় উপযুক্ত হরমোন যুক্ত ( সাধারণত NAA ) নতুন পুষ্টি মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয় । এর ফলে বিটপের নীচের প্রান্ত থেকে মূল জন্মায় এবং ক্ষুদ্র চারাগাছের ( plantlet ) সৃষ্টি হয় ।
5. ক্ষুদ্র চারাগাছের মাটিতে স্থানান্তর ( Transfer of plantlets to soil ) :
প্রথমে চারাগাছগুলিকে গ্রিনহাউসে কম আলো ও বেশি আর্দ্রতা যুক্ত পরিবেশে ছোটো ছোটো টবে স্থানান্তরিত করা হয় । এখানে প্রায় 3-4 সপ্তাহ রাখা হয় । এর ফলে গাছগুলিতে বেশি সংখ্যায় মূল ও পাতা জন্মায় এবং ধীরে ধীরে বাইরের পরিবেশে অভিযোজিত হয় , একে হার্ডেনিং ( Hardening ) বলে । পরবর্তী পর্যায়ে চারাগাছগুলিকে জমিতে স্থানান্তরিত করা হয় ।
আরো পড়ুন : গ্রীন হাউস এফেক্ট