ছোলা বীজের গঠন
ছোলা বীজের গঠন
ছোলা একটি দ্বিবীজপত্রী ও অসস্যল বীজ । ছোলা বীজের একপ্রান্ত চওড়া এবং অপর প্রান্তটি ছুঁচোলো । ছোলা বীজ নিম্নলিখিত অংশগুলি নিয়ে গঠিত ।

বীজত্বক ( Seed coat )
ছোলা বীজে দুটি আবরণী থাকে , যথা — বীজবহিস্ত্বক ও বীজঅন্তস্ত্বক ।
i. বীজবহিস্ত্বক ( Testa ) : বীজত্বকের বাইরের পুরু , শক্ত ও বাদামি বর্ণের অংশটি হল বীজবহিস্ত্বক বা টেস্টা ।
ii. বীজঅন্তস্ত্বক ( Tegmen ) : বহিস্ত্বকের ভিতরের পাতলা , অর্ধস্বচ্ছ এবং সাদা রঙের অংশটি হল বীজঅন্তস্ত্বক বা টেগমেন ।
বীজবহিস্ত্বকের ছুঁচোলো প্রান্তে একটি ক্ষতচিহ্ন থাকে , যার সাহায্যে বীজটি অমরার সঙ্গে যুক্ত থাকে , একে ডিম্বকনাভি ( hilum ) বলে । ডিম্বকনাভির নীচে বীজের ছুঁচোলো অগ্রভাগে একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র বর্তমান , একে ডিম্বকরঞ্জ বা মাইক্রোপাইল ( micropyle ) বলে । অঙ্কুরোদ্গমের সময় এই রন্ধ্র দিয়ে ভ্রূণমূল নির্গত হয় । ডিম্বকনাভির নিকট বীজের মাঝবরাবর স্থানে অবস্থিত ছোটো দাগটিকে র্যাফি ( raphe ) বলে ।
বীজত্বকের কাজ : বীজত্বক অন্তর্বীর্জকে রক্ষা করে ।
অন্তর্বীজ ( Kernel )
এটি বীজত্বকের ভিতরের সম্পূর্ণ অংশ । ছোলা বীজের অন্তর্বীর্জ কেবল ভ্ৰূণ ( embryo ) নিয়ে গঠিত । ভ্ৰূণ বীজপত্র ও ভ্ৰূৃণাক্ষ নিয়ে গঠিত ।
i. বীজপত্র ( Cotyledon ) : ছোলা বীজে দুটি বীজপত্র থাকে । বীজপত্রে খাদ্য সঞ্চিত থাকায় এটি স্থূল হয় ।
কাজ : খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা এবং অঙ্কুরোদ্গমের সময় শিশু উদ্ভিদকে খাদ্য সরবরাহ করা ।
ii. ভ্রূণাক্ষ ( Embryo – axis ) : বীজপত্র দুটি পরস্পর যে ক্ষুদ্র দণ্ডাকার অক্ষের সঙ্গে সংলগ্ন থাকে , তাকে ভ্ৰূণাক্ষ বলে । ভ্রূণাক্ষের অংশগুলি হল —
পর্বসন্ধি ( Nodal zone ) : ভ্রূণাক্ষের যে বিন্দুতে বীজপত্র দুটি সংযুক্ত থাকে তাকে পর্বসন্ধি বলে ।
ভ্রূণমূল ( Radicle ) : ভ্রূণাক্ষের নিম্নপ্রান্তটিকে ভ্রূণমূল বলে । ভ্রূণমূল থেকে শিশু উদ্ভিদের মূল সৃষ্টি হয় ।
ভ্রুণমুকুল ( Plumule ) : ভ্রূণাক্ষের শীর্ষপ্রান্তটিকে ভ্ৰূণমুকুল বলে । এটি শিশু উদ্ভিদের বিটপ গঠন করে ।
বীজপত্রাধিকান্ড ( Epicotyl ) : ভ্রূণাক্ষের পর্বসন্ধি ও ভ্রূণমুকুলের মাঝখানের স্থানকে বীজপত্রাধিকান্ড বলে ।
বীজপত্রাবকান্ড ( Hypocotyl ) : ভ্রূণাক্ষের ভ্রূণমূল ও পর্বসন্ধির মাঝখানের স্থানকে বীজপত্রাবকান্ড বলে ।
কাজ : ভ্রূণাক্ষের ভ্রূণমূল শিশু উদ্ভিদের প্রাথমিক মূল এবং ভ্রূণমুকুল শিশু উদ্ভিদের বিটপ অংশ গঠন করে ।
আরো পড়ুন : বীজ কাকে বলে