কলয়েড দ্রবণ কাকে বলে
কলয়েড দ্রবণ কাকে বলে
কোনো দ্রবনের দ্রাব পদার্থের কণাগুলির ব্যাস 10¯5 সেমি থেকে 10¯7 সেমির মধ্যে হলে কণাগুলি ওই দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় না । দ্রাব কণাগুলির দ্রাবকের মধ্যে প্রলম্বিত অবস্থায় ইতস্তত ঘুরে বেড়ায় । এইরূপ দ্রবনকে কলয়েড দ্রবণ বলে ।
কলয়েডের উদাহরণ :
কলয়েডের খুব পরিচিত উদাহরণ হল কুয়াশা । বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণা এই কুয়াশা তৈরি করে । দুধ , ক্রিম , জেলি , ভাতের ফ্যান , ধোঁয়া প্রভৃতি অসংখ্য কলয়েড আমরা প্রাত্যহিক জীবনে দেখতে পাই । অনেক ওষুধ জলে দ্রবীভূত হয় না , এগুলি কলয়েড আকারে ব্যবহার করা হয় ।
কলয়েড এর বৈশিষ্ট্য
i. দ্রবণ হল দ্রাব ও দ্রাবকের সমসত্ত্ব মিশ্রণ । প্রকৃত দ্রবণে দ্রাব বিভাজিত হয়ে অণু বা আয়নের আকারে দ্রাবকের আন্তরাণবিক ফাঁকে ফাঁকে ঢুকে যায় এবং সম্পূর্ণ সমসত্ত্ব মিশ্রণ তৈরি করে । এই দ্রাব কণাগুলির ব্যাস 10¯8 cm বা তার কম হয় ।
ii. এগুলি মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রে দেখা যায় না , এরা থিতিয়া পড়ে না বা আলোর বিচ্ছুরণ ঘটায় না ।
iii. আর এক ধরনের মিশ্রণ তৈরি করা যায় যাতে অপেক্ষাকৃত বড়ো বড়ো বস্তুকণা দ্রাবকের মতো একটি মাধ্যমের সাথে অসমসত্ত্বভাবে মিশে একটি অস্বচ্ছ মিশ্রণ তৈরি করে । এই বস্তুকণাগুলির প্রত্যেকটি অনেকগুলি অণু , পরমাণু বা আয়নের সমন্বয়ে গঠিত হয় । এই কণাগুলির ব্যাস প্রায় 10¯7cm থেকে 10¯5 cm এর মধ্যে হয় । এই কণাগুলি থিতিয়ে পড়ে না , এদের খালি চোখে দেখা যায় না কিন্তু আলট্রা মাইক্রোস্কোপ এ দেখা যায় । কণাগুলি আলোর বিচ্ছুরণ ঘটাতে পারে এবং এদের ব্রাউনীয় গতি দেখা যায় । এইরকম কণাগুলিকে কলয়েড কণা বলে এবং এইরকম মিশ্রণকে কলয়েড বলে ।
সুতরাং , কলয়েড হল একটি বিশেষ ধরনের মিশ্রণ যেখানে অণু-পরমাণুর চেয়ে প্রায় 10 থেকে 1000 গুণ বড়ো বড়ো বস্তুকণা কোনো মাধ্যমের সাথে অসমসত্ত্বভাবে মিশে থাকে , থিতিয়ে পড়ে না এবং আলোর বিচ্ছুরণ ঘটাতে পারে । কলয়েড কণাগুলি ফিল্টার কাগজের মধ্য দিয়ে যেতে পারে কিন্তু পার্চমেন্ট কাগজের মধ্য দিয়ে যেতে পারে না ।