সমযোজী যৌগ কাকে বলে
Contents
সমযোজী যৌগ কাকে বলে
রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের পরমাণুর মতো ইলেকট্রন বিন্যাস লাভের চেষ্টায় দুই বা ততোধিক পরমাণু পরস্পরের মধ্যে এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় যৌথভাবে ব্যবহার করে পরমাণুগুলির মধ্যে মিলন ঘটিয়ে যে যৌগ উৎপন্ন করে তাকে সমযোজী যৌগ বলে ।
সমযোজী যৌগের উদাহরণ :
দ্বিপরমাণুক গ্যাসীয় মৌল | H2 , O2 , N2 , F2 , Cl2 , I2 ইত্যাদি |
অধাতব হাইড্রাইড যৌগ | HCl , HF , HBr , HI , H2O , H2S , NH3 , PH3 ইত্যাদি |
অধাতব অক্সাইড যৌগ | NO2 , CO2 , SO2 , SO3 ইত্যাদি |
জৈব যৌগ | CH4 , C2H4 , C2H2 , C2H6 , C6H6 , CCl4 , CHCI3 ইত্যাদি |
সমযোজী যৌগের বৈশিষ্ট্য
( 1 ) ভৌত অবস্থা : বেশির ভাগ সমযোজী যৌগ সাধারণ উষ্ণতায় তরল বা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে । বেশি আণবিক গুরুত্ব সম্পন্ন কিছু কিছু সমযোজী যৌগ নরম কঠিন অবস্থায় থাকে ।
( 2 ) দ্রাব্যতা : সমযোজী যৌগগুলি সাধারণত জলে অদ্রাব্য কিন্তু অ্যালকোহল , ইথার , বেনজিনের মতো জৈব দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় ।
( 3 ) গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক : সমযোজী যৌগের অণুগুলির মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ বল কম হয় । ফলে সাধারণত এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক অপেক্ষাকৃত কম হয় । সিলিকন ডাই অক্সাইড , সিলিকন কার্বাইড প্রভৃতি কেলাসাকার সমযোজী যৌগে এর ব্যতিক্রম দেখা যায় ।
( 4 ) তড়িৎ পরিবাহিতা : সমযোজী যৌগে তড়িৎ পরিবহনের জন্য মুক্ত ইলেকট্রন বা আয়ন থাকে না । তাই এই যৌগগুলি তড়িৎ পরিবহন করতে পারে না ।
( 5 ) রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রকৃতি : সমযোজী যৌগগুলি আয়নে বিশ্লেষিত হয় না । তাই এই ধরনের যৌগগুলির মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ধীর গতিতে হয় এবং সাধারণত উভমুখী হয় ।
( 6 ) বন্ধনের অভিমুখ : প্রতিটি সমযোজী বন্ধনের নির্দিষ্ট অভিমুখ থাকে । তাই সমযোজী যৌগের অণুগুলির নির্দিষ্ট ত্রিমাত্রিক আকার থাকে ।
( 7 ) সমাবয়বতা : সমযোজী যৌগের সমাবয়বতা দেখা যায় ।
সমযোজ্যতার পরিমাপ
সমযোজী মৌল বা যৌগের অণু গঠনের ক্ষেত্রে কোনো মৌলের একটি পরমাণু যতগুলি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে , সেই সংখ্যার দ্বারা ওই মৌলের সমযোজ্যতা পরিমাপ করা হয় । যেমন—
■ হাইড্রোজেন অণু গঠনের সময় দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুর প্রত্যেকে একটি করে ইলেকট্রন দিয়ে একটি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে । তাই হাইড্রোজেনের যোজ্যতা = 1 ।
■ অক্সিজেন অণু গঠনের সময় দুটি অক্সিজেন পরমাণুর প্রত্যেকে দুটি করে ইলেকট্রন দিয়ে দুটি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে । তাই অক্সিজেনের যোজ্যতা = 2 ।
■ নাইট্রোজেন অণু গঠনের সময় দুটি নাইট্রোজেন পরমাণুর প্রত্যেকে তিনটি করে ইলেকট্রন দিয়ে তিনটি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে । তাই নাইট্রোজেনের যোজ্যতা = 3 ।