ঊর্ধ্বপাতন কাকে বলে
ঊর্ধ্বপাতন কাকে বলে
তাপ প্রয়োগ করলে কিছু কিছু কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত না হয়ে কঠিন থেকে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় এবং ওই বাষ্পকে ঠান্ডা করলে তা সরাসরি কঠিনে পরিণত হয় । এই ঘটনাকে ঊর্ধ্বপাতন বলে ।
ঊর্ধ্বপাতন এর উদাহরণ
কর্পূর , আয়োডিন , নিশাদল ( অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ) প্রভৃতি পদার্থের ঊর্ধ্বপাতন হয় ।
কোনো মিশ্রণে ঊর্ধ্বপাতন যোগ্য উপাদান থাকলে তা এই ঊর্ধ্বপাতন পদ্ধতিতে পৃথক করা যায় । নীচে একটি উদাহরণ দেওয়া হল ।
অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও বালির মিশ্রণ পৃথকীকরণ

উপকরণ :
( 1 ) পোর্সেলিন বেসিন ; ( 2 ) কঠিন অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও বালির মিশ্রণ ; ( 3 ) ত্রিপদ স্ট্যান্ড ; ( 4 ) তারজালি ও বুনসেন বার্নার ; ( 5 ) ফানেল , ফিলটার কাগজ , তুলো ।
পদ্ধতি :
■ একটি পোর্সেলিন বেসিনে কঠিন অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ( NH4Cl ) ও বালির মিশ্রণ নেওয়া হল ।
■ বেসিনটিকে একটি ত্রিপদ স্ট্যান্ডের ওপর রাখা তারজালির ওপর বসানো বালিগাহে রাখা হল ।
■ একটি ফানেলকে উলটে বেসিনে রাখা মিশ্রণকে ঢেকে দেওয়া হল । ফানেলের বাইরের গায়ে ভিজে ফিলটার কাগজ জড়িয়ে দেওয়া হল ও ফানেলের শেষ প্রান্তটি তুলো দিয়ে বন্ধ করা হল ।
■ বুনসেন বার্নারের সাহায্যে বালিগাহকে উত্তপ্ত করা হল । কিছুক্ষণ পর তাপ দেওয়া বন্ধ করা হল ।
পর্যবেক্ষণ :
কিছুক্ষণ পরে ফানেলটি তুলে এনে দেখা গেল ফানেলের ভিতরের পৃষ্ঠে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইডের কঠিন আবরণ জমে আছে এবং বেসিনে পড়ে আছে বালি ।
ব্যাখ্যা :
তাপ প্রয়োগের ফলে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ঊর্ধ্বপাতন জনিত কারণে তরলে পরিণত না হয়ে বাষ্পে পরিণত হয়ে ওপরের দিকে ওঠে এবং ফানেলের শীতল তলের সংস্পর্শে এসে কঠিনে পরিণত হয়ে ফানেলের ভিতরের তলে জমা হয় । ফানেলের ভিতরের তলে জমে থাকা কঠিন অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইডকে অন্য একটি পাত্রে সংগ্রহ করা হয় । এভাবে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও বালির মিশ্রণকে পৃথক করা হয় ।
এই পদ্ধতি অনুসরণ করে বালি ও আয়োডিন , বালি ও কর্পূর , সাধারণ লবণ ও নিশাদল প্রভৃতি মিশ্রণের উপাদানগুলিকে পৃথক করা সম্ভব ।