তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে
তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে
যে নিউক্লীয় ঘটনায় উচ্চ পারমাণবিক সংখ্যা বিশিষ্ট মৌলের অর্থাৎ যাদের নিউট্রন ও প্রোটন সংখ্যার অনুপাত 1.5 এর বেশি তাদের নিউক্লিয়াস থেকে সর্বদা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিশেষ প্রকার রশ্মি বিকীর্ণ হয় , যা বাহ্যিক কোনো প্রভাবক যেমন — চাপ , তাপ , আলোক , তড়িৎক্ষেত্র , চৌম্বক ক্ষেত্র ও অন্য মৌলের সঙ্গে রাসায়নিক বন্ধন দ্বারা প্রভাবিত হয় না , তাকে তেজস্ক্রিয়তা বলে ।
রশ্মি বিকিরণকারী পদার্থগুলিকে বলা হয় তেজস্ক্রিয় পদার্থ । ইউরেনিয়াম ( U ) , থোরিয়াম ( Th ) , পোলোনিয়াম ( Po ) , রেডিয়াম ( Ra ) প্রভৃতি মৌলিক পদার্থগুলি তেজস্ক্রিয় ।
তেজস্ক্রিয়তার বৈশিষ্ট্য
i. তেজস্ক্রিয়তা সম্পূর্ণভাবে একটি নিউক্লিয় ঘটনা । নিউক্লিয়াসের বাইরের ইলেকট্রনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই ।
ii. তেজস্ক্রিয় পরমাণুর নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয় । ফলে , এক মৌলের পরমাণু নতুন ধর্ম বিশিষ্ট অন্য এক মৌলের পরমাণুতে পরিণত হয় ।
iii. যেসব মৌলের পরমাণুর নিউট্রন ও প্রোটন সংখ্যার অনুপাত 1.5 এর বেশি , কেবলমাত্র তারাই স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা প্রদর্শন করে ।
iv. সব তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকেই উচ্চ ভেদন ক্ষমতা সম্পন্ন রশ্মি নির্গত হয় ; এই রশ্মি সহজেই অস্বচ্ছ কাগজ , পাতলা ধাতব পাত ইত্যাদি পদার্থকে ভেদ করতে পারে ।
v. তেজস্ক্রিয়তা একটি স্বাভাবিক , স্বতঃস্ফূর্ত ও অবিরাম ঘটনা । বাইরের কোনো প্রক্রিয়া অর্থাৎ উত্তপ্তকরণ , শীতলীকরণ , চাপ প্রদান বা তড়িৎক্ষেত্র ও চৌম্বক ক্ষেত্র প্রয়োগ ইত্যাদি এই ঘটনাকে প্রভাবিত করতে পারে না ।
তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে নির্গত রশ্মি সমূহ
তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে তিনপ্রকার রশ্মি নির্গত হয় । এদের বলা হয় — আলফা ( a ) রশ্মি , বিটা ( β ) রশ্মি ও গামা ( γ ) রশ্মি ।