ঘর্ঘরার যুদ্ধ
ঘর্ঘরার যুদ্ধ
রাজপুতদের শক্তি খর্ব করার পর বাবর আফগানদের শক্তি খর্ব করার জন্য সচেষ্ট হন । তখন ইব্রাহিম লোদির ভাই মামুদ লোদি আফগান সর্দারদের সংঘবদ্ধ করে বাবরের বিরোধিতা করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন । বাংলার সুলতান নসরৎ শাহ এবং বিহারের শের খাঁ মামুদকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন । এবং একযোগে দিল্লি আক্রমণের পরিকল্পনা নেন ।
বাবরের বাহিনী কনৌজ , বারাণসী , এলাহাবাদ দখল করে বিহারের সীমান্তে ঘর্ঘরা নদীর তীরে উপনীত হলে বাংলার নসরৎ শাহ , বিহারের শের খাঁ এবং জৌনপুরের মামুদ লোদি বাবরকে বাধা দেন । ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে পাটনার উত্তরে গঙ্গা ও ঘর্ঘরা নদীর সংগমস্থলে মোগল ও আফগান বাহিনীর সংঘর্ষ হয় । সুশিক্ষিত মোঘল বাহিনী আফগানদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় ।
ঘর্ঘরার যুদ্ধের গুরুত্ব
ঘর্ঘরার যুদ্ধে আফগানরা পরাজিত হয় ।
( i ) নসরৎ শাহ বাবরের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে নিজের সিংহাসন রক্ষা করেন । স্থির হয় , নসরৎ শাহ মোগল-আফগান যুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকবেন । তিনি বাবরের শত্রুদের আশ্রয় না দেওয়ার অঙ্গীকার করেন এবং বশ্যতা স্বীকার করেন । এর বিনিময়ে বাবর নসরৎ শাহের রাজ্যের সীমা মেনে নেন এবং অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতি নেন । কোশী-গণ্ডক নদী উভয় পক্ষের রাজ্যসীমা হিসেবে নির্দিষ্ট হয় ।
( ii ) বাবরের নেতৃত্বে মোগল সাম্রাজ্য পশ্চিমে অক্ষু নদী থেকে পূর্বে ঘর্ঘরা নদী এবং উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে গোয়ালিয়র পর্যন্ত প্রসারিত হয় । ঘর্ঘরা যুদ্ধের পরেই বাবর অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ( ১৫৩০ খ্রি. ) ।