ভক্তিবাদ ও সুফিবাদ এর মধ্যে সাদৃশ্য
ভক্তিবাদ ও সুফিবাদ এর মধ্যে সাদৃশ্য
সুফিবাদ ও ভক্তিবাদের মধ্যে নানাবিধ সাদৃশ্য লক্ষ করা যায় ।
( i ) উভয় মতেই মনে করা হয় যে , সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টির মধ্যে মিলন সম্ভব । এই মিলনই মোক্ষ বা মুক্তি ।
( ii ) উভয় দর্শনেই বাহ্যিক আচার আচরণ গুরুত্বহীন । ঈশ্বরের প্রতি গভীর প্রেম ও ভালোবাসা দ্বারাই ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করা সম্ভব ।
( iii ) ঈশ্বরের প্রতি প্রেম বা আত্মনিবেদনের মাধ্যম হিসেবে দুটি মতেই নৃত্য , গীত ও ভজন ইত্যাদির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় ।
( iv ) উভয় মতেই গুরু বা পির এর প্রয়োজন স্বীকার করা হয় । উভয় দর্শনে বিশ্বাস করা হয় যে , গুরুই কেবল শিষ্যকে সঠিক পথে চালিত করে তার মনকে ঈশ্বরমুখী করতে পারেন ।
( v ) উভয় মতের প্রচারকগণ সহজ সরল , আড়ম্বরহীন জীবন যাপন করতেন ।
( vi ) সুফি ও ভক্তিবাদের অনুগামীরা এসেছিলেন মূলত সমাজের দরিদ্র ও অবহেলিত অংশ থেকে । শ্রমজীবী নিম্নবর্গের মানুষেরাই এ দুটি মতের অনুগামী হন ।
( vii ) উভয় দর্শনেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সমন্বয়ের বাণী প্রচার করা হয়েছে ।
( viii ) প্রচলিত ধর্ম দুটি মতকেই গ্রহণ করতে দ্বিধা প্রকাশ করেছে । গোঁড়া হিন্দুরা যেমন ভক্তিবাদকে গুরুত্ব দিতে অস্বীকার করেন , তেমনি গোঁড়া মুসলমানরা সুফিবাদকে ইসলাম থেকে বিচ্যুতি বলে মনে করে । তা সত্ত্বেও উভয় ধর্মদর্শনই সমাজে গভীর জনপ্রিয়তা পেয়েছে ।