তরাইনের যুদ্ধ
Contents
তরাইনের যুদ্ধ
দিল্লির চৌহান বংশীয় রাজা তৃতীয় পৃথ্বীরাজ চৌহান ও মহম্মদ ঘুরির মধ্যে তরাইনের যুদ্ধ হয়েছিল । ভারত ইতিহাসে তরাইনের যুদ্ধের রাজনৈতিক গুরুত্ব অসীম ।
তরাইনের প্রথম যুদ্ধ
মহম্মদ ঘুরি পেশোয়ার , শিয়ালকোট দখল করার পর দিল্লি আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন । ১১৯১ খ্রিস্টাব্দে ঘুরি ভাতিন্দা আক্রমণ করলে তরাইনের প্রান্তরে উভয়পক্ষ মুখোমুখি হয় । দিল্লির চৌহান বংশীয় শাসক তৃতীয় পৃথ্বীরাজ মুসলমান আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে তুমুল লড়াই চালান । এই যুদ্ধে ঘুরি পরাজিত হন এবং নিজের রাজ্যে ফিরে যান ।
তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ
তরাইনের প্রথম যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পরের বছরই মহম্মদ ঘুরি আবার শক্তি সঞ্চয় করে দিল্লি অভিযান করেন । শুরু হয় তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ ( ১১৯২ খ্রি . ) । রাজপুতদের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে পৃথ্বীরাজ এই যুদ্ধে পরাজিত ও বন্দি হন ।
তরাইনের যুদ্ধের গুরুত্ব
লেনপুল এর মতে , এই বিজয় ভারত ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করে দেয় । তরাইনের যুদ্ধের ফলে—
( i ) ভারতের রাজনৈতিক শক্তিগুলির অন্তর্দ্বন্দ্ব ও দুর্বলতা প্রকট হয় ।
( ii ) এই যুদ্ধে জয়লাভের ফলে ভারতের দরজা তুর্কি আক্রমণকারীদের কাছে খুলে যায় । পূর্ব পাঞ্জাব ও দিল্লি তুর্কি অধিকারে গেলে গঙ্গা-যমুনা উপত্যকায় তুর্কিরা সহজে ঢুকতে পারে । আজমীরের পতনের ফলে রাজপুতানার দরজা তুর্কিদের কাছে খুলে যায় । সুলতান মামুদ কেবলমাত্র লুণ্ঠন করার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেন । কিন্তু মহম্মদ ঘুরি স্থায়ী রাজ্য স্থাপনের উদ্দেশ্যে এই অভিযান চালান । সুতরাং , তরাইনের বিজয় ভারতে স্থায়ী মুসলমান শাসনের সূচনা করে ।
( iii ) তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে পরাজয় , তুর্কিদের তুলনায় ভারতীয় সেনাদের রণকৌশল যে কতটা নিকৃষ্ট মানের তা প্রমাণ করে ।