ইতিহাস

পাল আমলের স্থাপত্য কীর্তি

পাল আমলের স্থাপত্য কীর্তি 

পাল যুগে স্থাপত্য কর্মের মধ্যে ছিল কিছু বিহার , স্তূপ ও মন্দির । তবে কালের করাল গ্রাসে সেগুলির অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে । পাহাড়পুরে সোমপুর বিহারের কিছু অংশ এখনও দেখা যায় । ড. নীহাররঞ্জন রায় এই নির্মাণশৈলীকে প্রাচীন বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিস্ময় বলে অভিহিত করেছেন । পাল যুগের কয়েকটি স্তূপের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে । সমকালীন পাণ্ডুলিপি চিত্রে ‘ মৃগ স্থাপন বরেন্দ্রী স্তূপ ’ , ‘ তুলা ক্ষেত্রে বর্ধমান স্তূপ ‘ ইত্যাদি কয়েকটি স্তূপের চিত্র পাওয়া গেছে । 

চতুষ্কোণ ভিত , ধাপে ধাপে তৈরি বেদী , পদ্মাকৃতি , ক্রমহ্রস্বায়মান দণ্ড এই স্তূপগুলির বৈশিষ্ট্য । পাহাড়পুরের সত্যপীরের ভিটায় এবং বাঁকুড়ার বহুলারায় ইটের তৈরি কয়েকটি স্তূপের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে । বর্ধমান জেলার ভরতপুর গ্রামে একটি বৌদ্ধ স্তূপের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে । সোমপুর বিহারের অন্তর্গত বিশালাকার মন্দিরটি পাল যুগের স্থাপত্য কর্মের একটি নিদর্শন । দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরটি নির্মিত হলেও এর মূল এবং সামগ্রিক পরিকল্পনা ধর্মপালের আমলের । 

পাল আমলের ভাস্কর্য 

পাল যুগে ভাস্কর্যের ভাণ্ডার ছিল পাহাড়পুর । পাহাড়পুরের মহাবিহারের দেয়ালে উৎকীর্ণ ফলক এবং পোড়া মাটির মূর্তিগুলি সে যুগের ভাস্কর্য ও চিত্রশিল্পের উন্নতমানের পরিচয় বহন করে । পাল যুগের ভাস্কর্যে গুপ্ত যুগের প্রভাব থাকলেও , তা মৌলিকতা বর্জিত ছিল না । কুমিল্লার কাছে ময়নামতী ও লালসাই পাহাড়ে পোড়ামাটির ফলক ও মূর্তি পাওয়া গেছে । অধিকাংশ মূর্তিই ধর্ম ভিত্তিক । কিছু নারী মূর্তি ও শিকারের দৃশ্য খোদিত আছে । মূর্তিগুলির সুষ্ঠু বেশবাস ও নমনীয়তা মার্জিত রুচির পরিচয় বহন করে ।

error: Content is protected !!