ইতিহাস

নবাব সুজাউদ্দিন খান

নবাব সুজাউদ্দিন খান

অপুত্রক অবস্থায় মুর্শিদকুলির মৃত্যু হলে তার জামাতা সুজাউদ্দিন খাঁ বাংলার মসনদে বসেন । মসনদে বসেই তিনি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদগুলিতে নিজের আত্মীয়পরিজন ও বিশ্বস্ত অনুচরদের বসিয়ে নিরাপত্তা বিধান করেন । জমিদারদের সাহায্য ও সহানুভূতি লাভের জন্য সুজাউদ্দিন পূর্বের কঠোর আইনগুলিকে শিথিল করেন এবং বহু জমিদারকে কারামুক্ত করেন । দিল্লির সম্রাটকে সন্তুষ্ট করার জন্য তিনি প্রচুর উপহার প্রেরণ করেন । 

সুজার আমলেই বিহার ও উড়িষ্যা বাংলার সাথে যুক্ত হয়ে সুবে বাংলার সৃষ্টি হয়েছিল । শাসনের সুবিধার্থে তিনি বাংলা সুবাকে ৪ টি শাসন বিভাগে বিভক্ত করেন । এগুলি হল কেন্দ্রীয় বিভাগ , শ্রীহট্ট ও চট্টগ্রাম বিভাগ , বিহার ও উড়িষ্যা বিভাগ । কেন্দ্রীয় বিভাগ সরাসরি সুবাদারের অধীন ছিল । অপর তিনটি বিভাগে সুবাদার মনোনীত ‘ নায়েব নাজিম’রা শাসন পরিচালনা করতেন ।

বণিকদের সাথে সম্পর্ক

সুজাউদ্দিন ইউরোপীয় বণিকদের সর্বদা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেষ্ট ছিলেন । নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হলেও বিদেশি বণিকেরা নবাবের সাথে সদ্ভাব রেখে চলত । সুজাউদ্দিন অর্থের প্রয়োজনে বিদেশি বণিকদের উপর জুলুম করতে দ্বিধা করতেন না ।

নবাব সুজাউদ্দিন খান এর কৃতিত্ব

ভারতীয় ঐতিহাসিকরা সুজাউদ্দিনের শাসনকালকে বাংলার শান্তি ও সমৃদ্ধির যুগ বলে অভিহিত করেছেন । স্যার জন শোর সুজাউদ্দিনকে ‘ প্রজাহিতৈষী সুদক্ষ শাসক ‘ বলে বর্ণনা করেছেন । গুলাম হুসেন -এর মতে , সুজা ছিলেন ন্যায় পরায়ণ , সুবিচারক ও বিদ্যোৎসাহী । তিনি বহু সুরম্য প্রাসাদ , অট্টালিকা ও মসজিদ নির্মাণ করেন । ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারা যান ।

error: Content is protected !!