জীবন বিজ্ঞান

সাইটোকাইনেসিস কাকে বলে

সাইটোকাইনেসিস কাকে বলে

কোষ বিভাজনের যে দশায় কোশের সাইটোপ্লাজম সমান দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ায় কোশ বিভাজনের সমাপ্তি ঘটে এবং দুটো অপত্য কোশ উৎপন্ন হয় , তাকে সাইটোকাইনেসিস বলে । টেলোফেজ দশার শুরুতেই সাইটোকাইনেসিস শুরু হয় এবং এই দশার সমাপ্তির সঙ্গেই সাইটোকাইনেসিস শেষ হয় । প্রাণীকোশের ক্ষেত্রে ক্লিভেজ বা ফারোয়িং পদ্ধতিতে সাইটোপ্লাজমের বিভাজন ঘটে ।

প্রাণী কোষে সাইটোকাইনেসিস

প্রাণীকোশের ক্ষেত্রে মাইটোসিস বা ক্যারিওকাইনেসিসের টেলোফেজ দশার শুরুতেই কোশের নিরক্ষীয় তল বরাবর কোশপর্দা সংকুচিত হতে থাকে । পরস্পর বিপরীত প্রান্তের কোশপর্দার এই ভাজ ক্রমশ ভিতরের দিকে বিস্তৃত হয়ে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত হলে কোশের সাইটোপ্লাজম সমান দুটি অংশে বিভক্ত হয় । প্রাণী কোশের ক্ষেত্রে সাইটোপ্লাজমের এইরূপ বিভাজন পদ্ধতিকে ক্লিভেজ বা ফারোয়িং বলে ।

উদ্ভিদ কোষে সাইটোকাইনেসিস

উদ্ভিদ কোশের ক্ষেত্রে মাইটোসিসের টেলোফেজ দশার শুরুতেই স্পিন্ডিলের নিরক্ষীয় অঞ্চলে দলবদ্ধভাবে অবস্থিত ইন্টারজোনাল অণুনালিকাকে ঘিরে গলগিবডি থেকে উৎপন্ন অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভেসিকল জমা হয় । ভেসিকলগুলিকে ফ্র্যাগমোজোম বলে । সাইটোপ্লাজম , ইন্টারজোনাল অণুনালিকা এবং ফ্রাগমোজোমকে একত্রে ফ্র্যাগমোপ্লাস্ট বলে । ফ্র্যাগমোজোমে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম পেকটেট থাকে । এরপর ফ্র্যাগমোজোমগুলি আকারে বড় হতে থাকে ফলে এদের পর্দাগুলি পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে অবিচ্ছিন্ন প্লাজমা পর্দা গঠন করে ফলে নিউক্লিয়াস দুটি পৃথক হয়ে দুটো অপত্য কোশের সৃষ্টি হয় । এই সময় ফ্যাগমোপ্লাস্ট পরিবর্তিত হয়ে কোশপাত গঠন করে ।  

কোশপাতের মধ্যে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ছিদ্র বা প্লাজমোডেসমাটা গঠিত হওয়ায় উভয় কোশের মধ্যে সাইটোপ্লাজমের সংযোগ রক্ষা হয় । এরপর কোশ পাতের পদার্থগুলির গঠন পরিবর্তিত হয়ে প্রকৃত মধ্যচ্ছদা গঠিত হয় ।  মধ্যচ্ছদার উভয় পার্শ্বে সেলুলোজ , হেমিসেলুলোজ , পেক্টোজ প্রভৃতি পদার্থ সঞ্চিত হয়ে প্রাথমিক কোশ প্রাচীর গঠন হয় ।  প্রাথমিক কোশ প্রাচীরের উভয় পার্শ্বে সেলুলোজ , লিগনিন , সুবারিন , পেকটিন প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে গৌণ কোশ প্রাচীর গঠিত হয় এবং উদ্ভিদ কোশের সাইটোকাইনেসিস প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে দুটি অপত্য কোশের সৃষ্টি হয় ।

error: Content is protected !!