কোষ বিভাজন কাকে বলে
Contents
কোষ বিভাজন কাকে বলে

যে পদ্ধতিতে মাতৃকোশ হতে অপত্য কোশের সৃষ্টি হয় তাকে কোষ বিভাজন ( Cell Division ) বলে ।
নিম্নলিখিত দুটি পর্যায়ের মাধ্যমে একটি কোশ বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোশের সৃষ্টি হয় । ( i ) ক্যারিওকাইনেসিস ও ( ii ) সাইটোকাইনেসিস ।
ক্যারিওকাইনেসিস :
যে পদ্ধতিতে কোশের নিউক্লিয়াসের বিভাজন ঘটে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি হয় , তাকে ক্যারিওকাইনেসিস ( Karyokinesis ) বলে ।
সাইটোকাইনেসিস :
যে পদ্ধতিতে নিউক্লিয়াস বিভাজনের পর কোশের সাইটোপ্লাজম দুভাগে বিভক্ত হয় তাকে সাইটোকাইনেসিস ( Cytokinesis ) বলে ।
কোষ বিভাজনের কারণ
কোশের সাইটোপ্লাজমীয় ক্রিয়াকলাপ সমূহ নিউক্লিয়াস দ্বারা পরিচালিত হয় । কোশীয় সাইটোপ্লাজমের পরিমাণ অত্যধিক হলে সাইটোপ্লাজমের উপর নিউক্লিয়াসের নিয়ন্ত্রণ কমে যায় । সেজন্য নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম উভয়ের পরিমাণ সঠিকভাবে রাখার জন্য কোশবিভাজন ঘটে । নিউক্লিয়াসে DNA- র পরিমাণ দ্বিগুণ হলে এই বিভাজন সম্ভব হয় ।
কোষ বিভাজনের প্রকারভেদ
জীবদেহে প্রধানত তিনপ্রকার কোশবিভাজন দেখা যায় , যথা— ( i ) অ্যামাইটোসিস ( ii ) মাইটোসিস ( iii ) মিয়োসিস ।
অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন :
যে কোশ বিভাজন প্রক্রিয়ায় ক্রোমোজোম এবং বেমতন্তু তৈরি না হয়ে কোশের মাঝবরাবর খাঁজ গঠনের মাধ্যমে নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্যকোশের সৃষ্টি করে এবং কখনোই নিউক্লিও পর্দার অবলুপ্তি ঘটে না , তাকে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে ।
মাইটোসিস কোষ বিভাজন :
যে কোশ বিভাজন প্রক্রিয়ায় পরিণত দেহকোশের নিউক্লিয়াস কতকগুলি নির্দিষ্ট দশার মাধ্যমে বিভাজিত হয়ে সমআকৃতি , সমপ্রকৃতি ও সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি করে এবং পরে সাইটোপ্লাজম একবার বিভাজিত হওয়ায় দুটি অপত্য কোশের সৃষ্টি হয় , তাকে মাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে ।
মিয়োসিস কোষ বিভাজন :
যে কোশ বিভাজন প্রক্রিয়ায় ডিপ্লয়েড জনন মাতৃকোশের নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম পরপর দুবার বিভাজিত হয় কিন্তু ক্রোমোজোমের বিভাজন একবার ঘটায় অর্ধেক সংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট চারটি হ্যাপ্লয়েড জনন কোশের সৃষ্টি হয় , তাকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন বলে ।
কোষ বিভাজনের গুরুত্ব
( i ) কোশ বিভাজনের মাধ্যমে এককোশযুক্ত জাইগোট হতে বহুকোশী পূর্ণাঙ্গ জীবের আবির্ভাব ঘটে ।
( ii ) পরিণত জীবদেহের ক্ষয়ক্ষতি পূরণে কোশ বিভাজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
( iii ) এককোশী জীব কোশ বিভাজনের মাধ্যমে অপত্য জীব সৃষ্টি করে , ফলে বংশবিস্তার অব্যাহত থাকে ।
( iv ) কোশ বিভাজনের মাধ্যমে গ্যামেট ( জনন কোশ ) উৎপাদিত হয় । যৌন জননকারী জীবে স্ত্রী ও পুং গ্যামেটের মিলনে নতুন জীব সৃষ্টি হয় ।