বন সংরক্ষণ কাকে বলে
বন সংরক্ষণ কাকে বলে
যে পদ্ধতিতে অরণ্য বা অরণ্যাঞ্চল গুলিকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির সাহায্যে সুপরিকল্পিত ভাবে ব্যবহার করা হয় এবং অপব্যবহার ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা হয় , তাকে অরণ্য সংরক্ষন বা বন সংরক্ষন বলা হয় ।
বন সংরক্ষণের উদ্দেশ্য
বন সংরক্ষণের বা অরণ্য সংরক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্যগুলি নিম্নরূপ ㅡ
( 1 ) বন সংরক্ষণের মাধ্যমে একদিকে যেমন বনের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য ঠিক থাকে তেমনি আবহাওয়া , বৃষ্টিপাত , বায়ুতে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের স্বাভাবিক পরিমাণ বজায় থাকে ।
( 2 ) বন সংরক্ষণের মাধ্যমে খাদ্য , কাগজ , ভেষজ ওষুধ , যানবাহন , গৃহ নির্মাণ ও আসবাবপত্রের প্রয়ােজনীয় উপাদানের সরবরাহ অক্ষুন্ন থাকে ।
( 3 ) ঢালু জমিতে প্রবাহিত জলস্রোতকে বনাঞ্চল প্রতিরােধ করে বিধ্বংসী বন্যার প্রকোপকে হ্রাস করে ।
( 4 ) বনে বসবাসকারী উদ্ভিদ ও প্রাণীদের অস্তিত্ব রক্ষা করে ।
( 5 ) বনাঞ্চলের উপস্থিতি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ।
বন সংরক্ষণের পদ্ধতি বা উপায়
বন সংরক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করা হয় ―
( i ) প্রয়ােজনের জন্য শুধুমাত্র পরিণত বৃক্ষ কাটতে হবে । গাছ কাটার সময় অন্য কোনাে গাছ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে ।
( ii ) অপরিণত গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে ।
( iii ) পরিণত গাছ কাটার সঙ্গে সঙ্গেই নতুন গাছ লাগাতে হবে , যাতে কেটে ফেলা গাছের ক্ষতিপূরণ হয় এবং বনভূমির সম্প্রসারণ ঘটে ।
( iv ) বনে যাতে দাবানল না লাগে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে ।
( v ) বনের গাছপালাকে বিভিন্ন প্রকার ক্ষতিকারক জীবাণু , ছত্রাক ও কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে হবে ।
( vi ) প্রয়ােজনীয় উদ্ভিদের উপযুক্ত বৃদ্ধির জন্য অবাঞ্ছিত উদ্ভিদ ও আগাছা নির্মূল করতে হবে ।
( vii ) প্রয়ােজন হলে চারাগাছের বৃদ্ধির জন্য বনের মধ্যে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে ।
( viii ) জনসাধারণ , ক্যাম্পার , অশিক্ষিত শিকারিদের বনজ সম্পদের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করার জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা দিতে হবে ।
( ix ) কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার কর্তৃক বন সংরক্ষণের জন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে এবং জাতীয় বনভূমি ও সংরক্ষিত বন প্রতিষ্ঠা করতে হবে ।