জল সংরক্ষণ কাকে বলে
Contents
জল সংরক্ষণ কাকে বলে
বর্তমান এবং ভবিষ্যতে মানুষের জলের চাহিদা মেটাতে যে পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক ও বিশুদ্ধ জলাশয় গুলিকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির সাহায্যে সুপরিকল্পিত ভাবে ব্যবহার করা হয় এবং অপব্যবহার ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা হয় , তাকে জল সংরক্ষন বলা হয় ।
মানুষ প্রধানত স্বাদু বা মিষ্টি জল ব্যবহার করে বলে , জল সংরক্ষণ বলতে স্বাদু বা মিষ্টি জলের সংরক্ষণ বােঝায় ।
জল সংরক্ষণের উদ্দেশ্য বা গুরুত্ব
জল সংরক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্যগুলি নিম্নরূপ —
( i ) প্রকৃতিতে জলের ভারসাম্য বজায় রেখে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করা ।
( ii ) উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের খরার প্রকোপ থেকে রক্ষা করা ।
( iii ) জল সংরক্ষণের মাধ্যমে পানীয় জল এবং কৃষিকার্যের জন্য জলের সরবরাহ অব্যাহত রাখা ।
( iv ) মানুষের দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখার জন্য প্রয়ােজনীয় জলের সরবরাহ অব্যাহত রাখা ।
জল সংরক্ষণের পদ্ধতি বা উপায়
মানুষের ব্যবহারযােগ্য স্বাদু বা মিষ্টি জল সংরক্ষণের উল্লেখযােগ্য পদ্ধতিগুলি নিম্নে আলােচিত হল—
বাঁধ নির্মাণ :
বিভিন্ন নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে বাঁধের পেছনে জলাধার সৃষ্টি করে , বর্ষার সময় অতিরিক্ত জলকে ধরে রাখা হয় । এর ফলে বর্ষাকালে নদী উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে প্লাবন রােধ করা সম্ভব হয় এবং গ্রীষ্মকালে জলাভাবের সময় প্রয়ােজন অনুযায়ী জল সরবরাহ করা হয় ।
জলাশয় খনন :
বিভিন্ন অঞ্চলে জলাশয় সৃষ্টি করে বৃষ্টির জল ধরে রেখে জলাভাবের সময় ওই জল ব্যবহার করা হয় ফলে নদ নদী এবং ভূগর্ভস্থ জলের ওপর নির্ভরতা কমে যায় এবং জল সংরক্ষণ সম্ভব হয় ।
বনাঞ্চল সৃষ্টি :
নগ্ন মাটি বেশি জল ধরে রাখতে পারে না , ফলে বর্ষার সময় অতিরিক্ত জল নদীতে পড়ে বন্যার সৃষ্টি হয় । পাহাড় ও নদ নদী সংলগ্ন অঞ্চলে বনাঞ্চল সৃষ্টি করলে উদ্ভিদের মূল অংশ মাটির কণাগুলিকে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ করে , ফলে বর্ষায় অতিরিক্ত জলকে মাটিতে ধরে রাখা সম্ভব হয় ।
মৃত্তিকা কর্ষণ :
উপযুক্ত পদ্ধতিতে মৃত্তিকা কর্ষণ করলে , কর্ষিত আলগা মৃত্তিকা বর্ষার সময় জল শােষণ করে মাটিতে জলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ।
পরিমিত ব্যবহার :
চাষের সময় প্রয়ােজনের বেশি জল বাবহার না করে জল সংরক্ষণ করা যায় ।
আগাছা নির্মূল :
চাষের জমির আগাছা ধ্বংস করে , আগাছা দ্বারা জল শােষণ রােধ করে জল সংরক্ষণ করা যায় ।
জলশােধন :
উপযুক্ত পদ্ধতিতে কলকারখানার এবং শহরের পয়ঃপ্রণালীর জল শােধন করে নদী নালাতে ফেলে এবং কৃষিজমিতে কীটনাশক পদার্থের ব্যবহার কমিয়ে জল সংরক্ষণ করা যায় ।