এক্স সিটু সংরক্ষণ কাকে বলে

এক্স সিটু সংরক্ষণ কাকে বলে

জৈব বৈচিত্র্যকে তাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিবেশের বাইরে এনে বাঁচিয়ে রাখবার ব্যবস্থাকে বলা হয় এক্স সিটু সংরক্ষণ । 

এক্স সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ :

কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রাণীদের রক্ষণাবেক্ষণ , হাওড়ার শিবপুরে উদ্ভিদ উদ্যান তৈরি করে নানাপ্রকার উদ্ভিদ সংরক্ষণ এক্স সিটু সংরক্ষণের উদাহরণ । 

এক্স সিটু সংরক্ষণের উপযােগিতা 

( 1 ) যে সকল উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের নিজস্ব পরিবেশ বিপন্ন হওয়ায় তাদের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে সেই সকল উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের সংরক্ষণের জন্য এক্স সিটু সংরক্ষণ খুবই উপযােগী । চিড়িয়াখানা এবং কৃত্রিম বনাঞ্চল তৈরি করে জীব সংরক্ষণই এক্স সিটু সংরক্ষণের প্রধান লক্ষ । 

( 2 ) লুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের বীজ এর জার্ম সংরক্ষণ করে সেইসব জীবের বংশ বাঁচিয়ে রাখাও এক্স সিটু সংরক্ষণের আওতাভুক্ত । এই কাজের জন্য উদ্ভিদের সীড ব্যাঙ্ক এবং প্রাণীদের শুক্রাণু ( sperm ) এবং ডিম্বাণু ( ovum ) ব্যাংক তৈরি করা হয় । 

( 3 ) বিভিন্ন প্রকার জীবের মধ্যে সংকরায়ণ করে জৈব বৈচিত্র্যের উন্নতিসাধন করাও এক্স সিটু সংরক্ষণের কাজ ।

( 4 ) বর্তমানে DNA ফিঙ্গার প্রিন্টিং পদ্ধতি ব্যবহার করে লুপ্তপ্রায় এবং বিলুপ্ত প্রজাতির জৈব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চলছে । এই কাজের জন্য জীবদের জিনব্যাংক , DNA লাইব্রেরি , জিনােম লাইব্রেরি তৈরি করে DNA সংরক্ষণ করা হচ্ছে । 

( 5 ) টিস্যু কালচার , প্রাণী ক্লোনিং ট্রানসজেনিক উদ্ভিদ এবং প্রাণী তৈরি এ সবকিছুই এক্স সিটু সংরক্ষণের অন্তর্গত বিষয় । মনে রাখতে হবে বিভিন্ন প্রকার পরিবেশে দূষণের ফলে পৃথিবীর নানাপ্রান্তে অবস্থিত অনেক উদ্ভিদ এবং প্রাণী আজ বিপন্ন । বিজ্ঞানীরা উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের বিপন্নতার মাত্রা নির্ণয় করে এদের সংকটজনক , বিপন্ন , বিপদগ্রস্থ , বিরল প্রভৃতি বিভিন্ন শ্রেণিতে চিহ্নিত করেছেন । সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দুর্লভ এবং সংকটজনক প্রজাতিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় । এদের মধ্যে এমন কোনাে কোনাে প্রজাতি আছে যাদের অবলুপ্তি ঘটলে সেই বাস্তুতন্ত্রের বিশাল পরিবর্তন ঘটবে । এই জাতীয় প্রজাতিকে কী স্টোন ( key stone ) প্রজাতি বলে । সুন্দরবনের বাঘ এরূপ একটি প্রজাতি ।

error: Content is protected !!