তেজস্ক্রিয় দূষণ কাকে বলে
তেজস্ক্রিয় দূষণ কাকে বলে
পারমাণবিক চুল্লি থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থ , চিকিৎসা ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষায় ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় আইসোটোপগুলি থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয় পারমাণবিক কণা এবং পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর ওর ভস্মগুলি পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে যে দূষণ ঘটায় , তাকেই তেজস্ক্রিয় দূষণ বলা হয় । পরিবেশে প্রায় 450 প্রকার তেজস্ক্রিয় আইসােটোপ দেখা যায় । যেমন — রেডিয়াম 226 , ইউরেনিয়াম 235 ও 238 , থােরিয়াম 232 , কার্বন 14 , স্ট্রনসিয়াম 90 ইত্যাদি ।
জীব সম্প্রদায়ের মধ্যে এই তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলি প্রবেশ করে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করতে পারে । উদাহরণ স্বরূপ দেখা যায় যে উদ্ভিদ স্ট্রনসিয়াম 90 শােষণ করলে এই স্ট্রনসিয়াম 90 উদ্ভিদের অস্থিকলায় জমা হয় । মানুষ এই উদ্ভিদ ভক্ষণ করলে মানুষের অস্থিমজ্জায় এই স্ট্রনসিয়াম 90 জমা হলে লিউকেমিয়া ( leukemia ) , অস্থি টিউমার ( bone tumour ) , প্রজননিক বিঘ্নতা ( loss of reproductive ability ) এবং শিশু মৃত্যু ( infant mortality ) প্রভৃতি রােগের সৃষ্টি হয় ।
তেজস্ক্রিয় দূষণের প্রভাব
i. তেজস্ক্রিয় দূষণের ফলে মানুষের সমস্ত দেহকলায় কোষ বিভাজন হ্রাস পায় এবং জনন কোষে মিউটেশন ঘটে । ফলে দেহে নানা প্রকার বিকৃতি দেখা দেয় , যা পরবর্তী প্রজন্মেও বাহিত হয় ।
ii. দীর্ঘসময় বা দীর্ঘকাল বেশি মাত্রার তেজস্ক্রিয় বিকিরণের সংস্পর্শে থাকলে লিউকোমিয়া , অস্থি টিউমার , ফুসফুসে ক্যানসার , নানারকম স্নায়বিক গোলযোগ , দৃষ্টি শক্তি হ্রাস ইত্যাদি হতে পারে ।
তেজস্ক্রিয় দূষণ প্রতিরোধের উপায়
i. তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থকে বিশেষ ধরনের সিসার পাত্রে রেখে সিল করে মাটির অনেক নীচে পুঁতে রাখতে হবে অথবা গভীর সমুদ্রে ফেলে দিতে হবে ।
ii. আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে বা মধ্যস্থতায় পারমাণবিক অস্ত্র শস্ত্র নির্মাণের পরীক্ষা নিরীক্ষা বন্ধ করতে হবে ।
iii. তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বা বিকিরণের সামনে কাজ করার সময় উপযুক্ত আবরক বা প্রতিরোধক ব্যবহার করা প্রয়োজন ।