ল্যামার্কের মতবাদ
Contents
ল্যামার্কের মতবাদ

‘ বায়ােলজি ’ শব্দটির প্রবক্তা জ্যাঁ ব্যাঁপ্তিস্তে দ্য মঁয়ে ল্যামার্ক 1809 খ্রিস্টাব্দে ফিলােজফিক জুলজিক গ্রন্থে জীব বিবর্তন সম্বন্ধে তাঁর মতবাদ প্রকাশ করেন । জীব বিবর্তন সম্পর্কে ল্যামার্কের মতবাদ কতকগুলি সূত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত যা ল্যামার্কবাদ বা ল্যামার্কের তত্ত্ব নামে পরিচিত । সূত্রগুলি হল— ( ক ) পরিবেশের প্রভাব এবং জীবের সচেষ্টতা , ( খ ) অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহার , ( গ ) অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ , ( ঘ ) নতুন প্রজাতির উৎপত্তি ।
পরিবেশের প্রভাব ও জীবের সচেষ্টতা
ল্যামার্কের মতে পরিবেশের প্রভাবে জীবের স্বভাবে পরিবর্তন ঘটে এবং পরবর্তীক্ষেত্রে এই পরিবর্তনই আকৃতির পরিবর্তন ঘটাতে সাহায্য করে । বিশেষ কোনাে অঙ্গের প্রয়ােজনীয়তা পরিবেশের পরিবর্তনের কারণে বাড়লে জীব সচেষ্টভাবে সেই অঙ্গকে পরিপুষ্ট করে এবং একইভাবে পরিবেশের পক্ষে অপ্রয়ােজনীয় অঙ্গকে দুর্বল করে বিবর্তনের ধারা পরিবর্তন করতে পারে ।
অঙ্গের ব্যবহার এবং অব্যবহার
পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে উপযােগী করে তােলার জন্য জীব নির্দিষ্ট কোনাে অঙ্গ বা অঙ্গসমূহকে ধারাবাহিকভাবে ক্রমাগত ব্যবহার করে , ফলে পরিবেশের প্রয়ােজনীয়তার কারণে ওই অঙ্গ বা অঙ্গসমূহ ধীরে ধীরে সবল ও সুগঠিত হয় , আবার একইভাবে পরিবেশের পক্ষে অপ্রয়ােজনীয় অঙ্গের ক্রমাগত অব্যবহারের ফলে ওই অঙ্গটি দুর্বল ও নিষ্ক্রিয় হবে এবং অবশেষে অবলুপ্ত হয়ে যাবে ।
অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ
ল্যামার্কের তত্ত্ব অনুযায়ী কোনাে জীব তার জীবনকালে পরিবেশের প্রভাবে নিজ প্রচেষ্টায় যে সকল বৈশিষ্ট্য অর্জন করে , সেই বৈশিষ্ট্যগুলি পরবর্তী প্রজন্মের জীবে সঞ্চারিত হয় ।
নতুন প্রজাতির উৎপত্তি
ল্যামার্কের মতে প্রতিটি প্রজন্মে নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য অর্জিত হয় এবং অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুক্রমণের ফলে মন্থর অথচ গতিশীল ধারাবাহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি প্রজাতি থেকে অপর একটি নতুন প্রজাতির সৃষ্টি হয় ।