বায়োস্ফিয়ার কাকে বলে

Contents

বায়োস্ফিয়ার কাকে বলে

istockphoto 1264791694 612x6121 1
বায়োস্ফিয়ার কাকে বলে

পৃথিবীর যে কোনাে অঞ্চল যেখানে সজীব বস্তু পাওয়া যায় তাকে বায়ােস্ফিয়ার বলা হয় । অর্থাৎ পৃথিবীর সকল বাস্তুতন্ত্রকেই একত্রে বায়ােস্ফিয়ার বলে । অর্থাৎ পৃথিবীর পরিবেশে অজৈব এবং জৈব উপাদানের সমন্বয়ে যত বাস্তুতন্ত্র গঠিত হয় তাদের সমষ্টিকে বায়ােস্ফিয়ার ( biosphere ) বলা যায় । এজন্য বায়ােস্ফিয়ারকে ইকোস্ফিয়ার ও বলা হয় ।

বায়োস্ফিয়ার এর বিস্তৃতি

বায়ােস্ফিয়ার সমুদ্রের তলদেশ থেকে পর্বতের শৃঙ্গ পর্যন্ত প্রায় 22.5 কিমি বিস্তৃত । এই বিশাল অংশের অনেকটাই জীবের বাসযােগ্য নয় । কারণ , কোথাও খুব ঠান্ডা , অক্সিজেনের অভাব আবার কোথাও মহাজাগতিক রশ্মির আধিক্য থাকে । 

বায়োস্ফিয়ার এর প্রকারভেদ

বায়ােস্ফিয়ারকে তিনটি অংশে ভাগ করা যায় । যথা ( ক ) লিথােস্ফিয়ার ( lithosphere ) ; ( খ ) হাইড্রোস্ফিয়ার ( hydrosphere ) এবং ( গ ) অ্যাটমােস্ফিয়ার ( atmosphere ) । 

লিথোস্ফিয়ার : এটি পৃথিবীর কঠিনতম অংশ । এতে আছে প্রস্তর ও মাটি । 

হাইড্রোস্ফিয়ার : এটি পৃথিবীর তরলতম অংশ । এটি পৃথিবীর উপরিতলের প্রায় 70 শতাংশ অংশ জুড়ে বিস্তৃত । এতে আছে সকল মহাসমুদ্র , সমুদ্র , নদী সহ যাবতীয় জলাশয় । 

অ্যাটমোস্ফিয়ার : এটি পৃথিবীর গ্যাসীয় অংশ । এই স্তর লিথােস্ফিয়ার বায়ােস্ফিয়ার কে বেষ্টন করে থাকে । 

বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ

পৃথিবীর যে সকল অঞ্চলে জীব বসবাস করে সেই সেই অঞ্চলকে বায়ােস্ফিয়ার ( Biosphere ) বলে । বায়ােস্ফিয়ারের মধ্যে যে স্থানে জীব সম্প্রদায়ের উন্নতির ও সংরক্ষণের জন্য গৃহীত প্রকল্পকে বলা হয় বায়ােস্ফিয়ার রিজার্ভ । 1971 খ্রিস্টাব্দে UNESCO Man and the Biosphere programme বা MAB এর অধীনস্থ Biosphere Reserve Programme ( BRP ) চালু করেন । এই প্রােগ্রামের মূল উদ্দেশ্য হল , 

( ক ) প্রতিনিধিত্বমূলক বাস্তুতন্ত্র এবং জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের দীর্ঘমেয়াদী in-situ সংরক্ষণ । 

( খ ) মৌল ও প্রয়ােগিক গবেষণার সুযােগ সুবিধা তৈরি করা । 

( গ ) প্রয়ােজন ভিত্তিক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ । 

( ঘ ) জীব সম্প্রদায়ের উন্নতি বিধানে যত্নবান হওয়া এবং লব্ধজ্ঞান ও অভিজ্ঞতার বিশ্বব্যাপী প্রসারণ । 

1985 খ্রিস্টাব্দের তথ্য অনুসারে পৃথিবীর 60 টি দেশে 243 টি বায়ােস্ফিয়ার রিজার্ভের তালিকা পাওয়া যায় । বর্তমানে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে । 1992 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আমাদের দেশে 7 টি বায়ােস্ফিয়ার রিজার্ভ তৈরি হয়েছে । এদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন , বায়ােস্ফিয়ার রিজার্ভ হিসাবে অন্যতম । উন্নতির জন্য প্রতিটি বায়ােস্ফিয়ার রিজার্ভকে চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হয় । এগুলি হল ( 1 ) কোর অঞ্চল , ( 2 ) বনজ অঞ্চল , ( 3 ) পর্যটক অঞ্চল এবং ( 4 ) পুণরুদ্ধার অঞ্চল ।

error: Content is protected !!