ডেট্রিটাস খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে

ডেট্রিটাস খাদ্য শৃঙ্খল কাকে বলে

গ্রেজিং খাদ্য শৃঙ্খলের বর্জ্য নিষ্কাশিত এবং মৃত জৈব পদার্থকে ডেট্রিটাস বলে । ডেট্রিটাসের মধ্যেকার শক্তি সামগ্রিকভাবে বাস্তুতন্ত্র থেকে নষ্ট হয় না পরন্তু এটি একদল খাদকের শক্তি হিসাবে ব্যবহৃত হয় । এই খাদকদের অর্থাৎ যারা ডেট্রিটাস ভক্ষণ করে তাদের ডেট্রিডাের বলে এবং এদের খাদ্যশৃঙ্খলকে ডেট্রিটাস খাদ্য শৃঙ্খল বলে ।

উদাহরণ : মৃতজীব কেঁচো ছােটোপাখি ঈগল ।

ডেট্রিটাস খাদ্য শৃঙ্খল এর বৈশিষ্ট্য

ডেট্রিটাস খাদ্য শৃঙ্খল এর বৈশিষ্ট্যগুলি হলㅡ

( 1 ) বাস্তুতন্ত্রে শক্তির প্রবহণে ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খল উল্লেখযােগ্য উপাদান হিসাবে পরিগণিত । 

( 2 ) ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খলে শক্তির প্রবহণ ক্রমিক স্তরে বা ধাপে ধাপে ঘটে না , পরন্তু ক্রমাগত প্রবাহিত হয় । 

( 3 ) ডেট্রিটাস জীবের মধ্যে অলগি , ব্যাকটেরিয়া , স্নাইমমােল্ড ছত্রাক , প্রােটোজোয়া , পতঙ্গ , মাইটস , ক্রাসটেসিয়া , সেন্টিপেড , রটিফার , মােলাস্কা , অ্যানিলিডা , নিমাটোডা এবং কিছু মেরুদণ্ডী উল্লেখযােগ্য । এদের মধ্যে কিছু কিছু জীবের খাদ্য আপেক্ষিক এবং কিছু জীব সর্বভুক । গ্রেজিং খাদ্যশৃঙ্খলে শক্তির সঞ্চয় অভ্যন্তরীণ কিন্তু ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খলে বেশির ভাগ শক্তি জীবদেহের বাইরে অর্থাৎ ডেট্রিটাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ।

ডেট্রিটাস খাদ্য শৃঙ্খলের তাৎপর্য 

( 1 ) ডেট্রিটাস জীব আংশিক পচিত জৈবপদার্থের খন্ডাংশ ভক্ষণ করে , এই খাদ্য তার দেহে আংশিকভাবে পাচিত হয় এবং যে রাসায়নিক শক্তি নির্গত হয় তার দ্বারা দেহের বিপাক ক্রিয়া সাধিত হয় এবং বাকি অপাচ্য খাদ্য সরল অণু হিসাবে রেচিত হয় । 

( 2 ) এই রেচিত পদার্থ তৎক্ষণাৎ আর একটি জীব খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে এবং তার দেহেপূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে । এভাবে মৃত জৈব যৌগে যে জটিল পদার্থ ছিল তা ক্রমে খুব সরল যৌগে ভেঙে যায় , এমনকি অনেক সময় কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জলেও পরিণত হয় । 

( 3 ) মৃত জৈব যৌগ ভাঙতে ভাঙতে শেষে হিউমিক অ্যাসিড নামক জৈব অ্যাসিডে পরিণত হয় । স্বাভাবিক পরিবেশে হিউমিক অ্যাসিড বা হিউমাস বেশ স্থায়ী এবং মৃত্তিকার একটি প্রয়ােজনীয় অংশ হিসাবে পরিণত হয় । 

( 4 ) যে পদ্ধতিতে গ্রেজিং খাদ্যশৃঙ্খল থেকে ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খলে শক্তির পরিবহন ঘটে সেই পদ্ধতিতেই ডেট্রিটাস খাদ্যশৃঙ্খল থেকে গ্রেজিং খাদ্যশৃঙ্খলেও শক্তি পরিবাহিত হতে পারে ।

error: Content is protected !!