যৌগিক পত্র কাকে বলে
Contents
যৌগিক পত্র কাকে বলে

পাতার ফলক যদি গভীরভাবে খন্ডিত হয়ে মধ্যশিরাকে স্পর্শ করে আলাদা আলাদা খন্ডে বিভক্ত হয় তাদের যৌগিক পত্র বলে ।
প্রত্যেকটি খন্ডাশ দেখতে ছােটো পাতার মতাে হয় । আকৃতিতে ছােটো বলে এদের পত্রক ( Leaf let ) বলা হয় । একটি যৌগিক পত্রে কমপক্ষে দুটি বা তার অনেক বেশি পত্রক থাকে । মধ্যশিরাকে পত্ৰক-অক্ষ ( Rachis ) বলে । অক্ষে কাক্ষিক মুকুল থাকে । যৌগিকপত্রকে দু’ভাগে ভাগ করা যায় , যেমন 一 ( 1 ) পক্ষল যৌগিক পত্র ( Pinnate Compound leaf ) এবং ( 2 ) করতলাকার যৌগিক পত্র ( Palmate compound leaf )।
পক্ষল যৌগিক পত্র
পত্ৰক-অক্ষের দুপাশে পত্রকগুলি পাখির পালকের মতাে সাজানাে হলে , তাকে পক্ষল যৌগিক পত্র বলা হয় । পক্ষল যৌগিক পত্র বিভিন্ন প্রকার , যেমন ( i ) একপক্ষল ( Unipinnate ) , ( ii ) দ্বিপক্ষল ( Bipinnate ) , ( iii ) ত্রিপক্ষল ( Tripinnate ) , ( iv ) বহুযৌগিক ( Decompound ) ।
একপক্ষল যৌগিক পত্র :
যে যৌগিক পত্রের ফলক একবার মাত্র খন্ডিত হয় , তাকে একপক্ষল যৌগিক পত্র বলে । এখানে পত্রাক্ষ মাত্র একটি এবং এর দু’পাশে পত্ৰকগুলি পাখির পালকের মতাে সাজানাে থাকে । একপক্ষল যৌগিক পত্রকে আবার দু’ভাগে ভাগ করা হয় , যেমন- ( a ) সচূড় পক্ষল ( Imparipinnate ) , ( b ) অচূড় পক্ষল ( Paripinnate ) ।
সচূড় পক্ষল যৌগিক পত্র : যৌগিক পত্রের শীর্ষে একটি পত্রক থাকলে তাকে সচূড় পক্ষল যৌগিক পত্র বলা হয় । উদাহরণ — গােলাপ ( Rosa centifolia ) , অপরাজিতা ( clitoria ternatea ) প্রভৃতি ।
অচূড় পক্ষল যৌগিক পত্র : অনেক সময় যৌগিক পত্রের শীর্ষে দুটি পত্রক অর্থাৎ এক জোড়া পত্রক থাকে । একে অচূড় পক্ষল যৌগিক পত্র বলে । উদাহরণ — তেঁতুল ( Tamarindus indica ) , কল্কাসুন্দা ( Cassia sophera ) প্রভৃতি ।
দ্বিপক্ষল যৌগিক পত্র :
যে যৌগিক পত্রের ফলকটি দুবার খন্ডিত হয় , ফলে পত্রক-অক্ষটির পাশ থেকে শাখা পত্ৰক-অক্ষ ( Secondary axis ) উৎপন্ন হয় তাকে দ্বিপক্ষল যৌগিক পত্র বলে । শাখা পত্রক-অক্ষের দু-পাশে ক্ষুদ্র পত্রকগুলি যুক্ত থাকে । উদাহরণ — লজ্জাবতী ( Mimosa pudica ) , বাবলা ( Acacia arabica ) প্রভৃতি ।
ত্রিপক্ষল যৌগিক পত্র :
এই ধরনের যৌগিক পত্রের ফলক তিনবার খন্ডিত হয় , ফলে পত্রক-অক্ষ থেকে শাখা পত্রক অক্ষ এবং শাখা পত্রক অক্ষ থেকে প্রশাখা পত্রক অক্ষ ( Tertiary axis ) উৎপন্ন হয় । প্রশাখা পত্রক-অক্ষের দুপাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পত্ৰকগুলি সাজানাে থাকে । উদাহরণ — সজনে ( Moringa ) ।
বহু যৌগিক যৌগিক পত্র :
যে যৌগিক পত্রের ফলক তিনেরও বেশি বার খন্ডিত হয় অর্থাৎ পত্রক-অক্ষটি বহুবার খন্ডিত হয়ে পত্রক বহন করলে তাকে বহু যৌগিক যৌগিক পত্র বলে । উদাহরণ — গাজর ( Daucas carota ) , ধনে ( Coriandrum sativum ) , মৌরি ( Foeniculum vulgare ) ।
করতলাকার যৌগিক পত্র
পত্ৰকগুলি বৃন্তের শীর্ষে একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে মিলিত হয়ে আঙুলের মতাে সাজানাে থাকলে তাকে করতলাকার যৌগিক পত্র বলে । করতলাকার যৌগিক পত্রের ক্ষেত্রে পত্রকের সংখ্যা অনুসারে এদের নামকরণ করা হয় ।
একফলক করতলাকার যৌগিক পত্র :
করতলাকার যৌগিক পত্রের বৃন্তের শীর্ষে একটিমাত্র পত্রক থাকলে তাকে একফলক করতলাকার যৌগিক পত্র বলে । উদাহরণ — লেবু ( Citrus ) , বাতাবি ( Citrus maxima ) , কমলা প্রভৃতি ।
দ্বিফলক করতলাকার যৌগিক পত্র :
বৃন্তের শীর্ষে দুটি পত্রক একই বিন্দুতে মিলিত হলে , তাকে দ্বিফলক করতলাকার যৌগিক পত্র বলা হয় । উদাহরণ — হিঙ্গন ( Balanities aegyptica ) ।
ত্রিফলক করতলাকার যৌগিক পত্র :
বৃন্তের শীর্ষে একটি বিন্দুতে তিনটি পত্ৰক মিলিত হলে তাকে ত্রিফলক করতলাকার যৌগিক পত্র বলে । উদাহরণ — আমরুল ( Oxalis corniculata ) , বেল ( aegle marmelos ) প্রভৃতি ।
চতুঃফলক করতলাকার যৌগিক পত্র :
বৃন্তের শীর্ষে একটি বিন্দুতে চারটি পত্রক মিলিত হলে তাকে চতুঃফলক করতলাকার যৌগিক পত্র বলা হয় । উদাহরণ — শুশনি ( Marsilea quadifolia ) ।
অঙ্গুলকার করতলাকার যৌগিক পত্র :
বৃন্তের শীর্ষে একটি বিন্দুতে চারটির বেশি পত্ৰক মিলিত হলে তাকে অঙ্গুলকার করতলাকার যৌগিক পত্র বলে । উদাহরণ — শিমুল ( Bombax ceiba ) , শ্বেত হুড়হুড়ে ( Gynandropsis pentaphylla ) প্রভৃতি ।