পাতা কাকে বলে
Contents
পাতা কাকে বলে

কান্ড ও শাখাপ্রশাখার পর্ব থেকে উৎপন্ন অসদৃশ , সীমিত বৃদ্ধি সম্পন্ন , চ্যাপ্টা , প্রসারিত সবুজ বর্ণের পার্শ্বীয় অঙ্গকে পাতা বলে ।
পাতার বৈশিষ্ট্য
পাতার বৈশিষ্ট্যগুলি হল一
i. পাতা কান্ড বা শাখাপ্রশাখার পর্ব থেকে উৎপন্ন হয় ।
ii. পাতা কান্ড বা শাখার পার্শ্বীয় অসদৃশ অঙ্গ ।
iii. পাতা বহির্জনিষ্ণুভাবে উৎপন্ন হয় ।
iv. এরা অগ্রোন্মুখভাবে ( acropetal ) সাজানাে থাকে ।
v. পাতার বৃদ্ধি সীমিত ।
vi. পাতার কক্ষে সর্বদা কাক্ষিক মুকুল থাকে ।
vii. পাতায় পত্ররন্ধ্র থাকে ।
viii. পাতার নালিকা বান্ডিল সমপার্শ্বীয় ও বদ্ধ প্রকৃতির ।
ix. পাতা সালােকসংশ্লেষ ও প্রস্বেদনের প্রধান স্থান ।
পাতার প্রকারভেদ
পাতার অবস্থান আকৃতি ও প্রকৃতির উপর নির্ভর করে পাতাকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন —
বীজপত্র :
বীজমধ্যস্থ ভ্রূণের ভ্রূণাক্ষের সঙ্গে সংলগ্ন পাতাকে বীজপত্র বলে । এটিই উদ্ভিদের প্রথম পাতা । বীজপত্র সাধারণত স্ফীত বা পাতলা ও রসালাে হয় । দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের বীজে দুটি এবং একবীজপত্রী উদ্ভিদের বীজে একটি বীজপত্র থাকে ।
কাজ — খাদ্য সঞ্চয় করা বীজপত্রের প্রধান কাজ ।
শল্কপত্র :
কান্ডের পর্ব থেকে নির্গত আঁশের মতে , ছোটো , অবৃন্তক শুষ্ক পাতাকে শল্কপত্র বলে । এদের কক্ষে কাক্ষিক মুকুল থাকে । আদা , ওল প্রভৃতি মৃদগত কান্ডে এবং ঝাউ , শতমূলী প্রভৃতি বায়বীয় কান্ডে সবুজ শল্কপত্র দেখা যায় । শল্কপত্রে খাদ্য সঞ্চিত হলে রসাল হয় ( উদাহরণ — পিয়াজ ও রসুন ) ।
কাজ — কাক্ষিক মুকুলকে আবৃত রাখা এবং কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে খাদ্য সঞ্চয় করা শল্কপত্রের প্রধান কাজ ।
প্রাথমিক পত্র :
কান্ড বা তার শাখায় প্রথম কয়েকটি পাতা পল্লবপত্রে পরিণত না হয়ে যদি কণ্টক বা আকর্ষে পরিণত হয় তাদের প্রাথমিক পত্র বা প্রফিলস বলে । উদাহরণ — বেল গাছের কণ্টক , লেবু গাছের কণ্টক , কুমড়োর আকর্ষ ইত্যাদি ।
কাজ — এদের প্রধান কাজ হল উদ্ভিদকে আত্মরক্ষায় বা আরােহণে সাহায্য করা ।
পল্লব পত্র :
কান্ড বা শাখাপ্রশাখার পর্ব থেকে উৎপন্ন চ্যাপটা সবুজ বর্ণের পাতাকে পল্লব পত্র বলে ।
কাজ — এটি উদ্ভিদকে সালােকসংশ্লেষ , শ্বসন ও প্রস্বেদনে সাহায্য করে ।
পুষ্পপত্র :
ফুলের চারটি স্তবকের (বৃতি , দলমন্ডল , পুংকেশর ও গর্ভকেশর )প্রতিটি অংশকে পুষ্পপত্র বলে । প্রকৃতপক্ষে এরা রূপান্তরিত পাতা ।
কাজ — ফুলের বৃতি ও দলমন্ডল জননে অংশগ্রহণ করে না । এরা পুংকেশর ও গর্ভকেশরকে রক্ষা করে এবং পরাগযোগে সাহায্য করে । পুংকেশর ও গর্ভকেশর জনন প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে । এদের স্পোরোফিল বলে ।
মঞ্জরিপত্র :
পুষ্প ও পুষ্পমঞ্জরির গােড়ায় অথবা মঞ্জরি দন্ডের পর্বসন্ধিতে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাতা থাকে , তাদের মঞ্জরিপত্র বা পুষ্পধরপত্র বলে । মঞ্জরিপত্র বিভিন্ন প্রকারের হয় । যেমন — পত্ৰাকৃতি ( মুক্তাঝুরি ) , দল সদৃশ ( বাগানবিলাস ) , উপবৃত্তাকৃতি ( জবা ) , স্পেদাকৃতি ( কচু ) ইত্যাদি । এরা নানান বর্ণের হয়ে থাকে । যেমন — লাল ( বাগানবিলাস ) , সবুজ ( জবা ) , হলদেটে ( মুসান্ডা ) ইত্যাদি ।
কাজ — পুষ্পমুকুলকে রক্ষা করা এবং কীট -পতঙ্গদের আকৃষ্ট করে পরাগসংযােগে সাহায্য করা এদের প্রধান কাজ ।