গ্রাম পজিটিভ ও গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া
Contents
গ্রাম পজিটিভ ও গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া

খ্রিস্টিয়ান গ্রাম ( Christian Gram ) 1884 খ্রিস্টাব্দে রঞ্জক বা স্টেন ( Stain ) ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়াকে দু’ভাগে বিভক্ত করেন । ক্রিস্টাল ভায়ােলেট ও আয়ােডিন দিয়ে তৈরি গ্রাম স্টেন ( Gram Stain ) ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়াকে পৃথক করা যায় । তার নামানুসারে ব্যাকটেরিয়ার দুটি ভাগের একটিকে গ্রাম পজিটিভ ও অন্যটিকে গ্রাম নেগেটিভ বলা হয় ।
গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া ( Gram positive Bacteria )
যেসব ব্যাকটেরিয়ার কোশপ্রাচীর ক্রিস্টাল ভায়ােলেট জাতীয় ক্ষারীয় রঞ্জক ও আয়ােডিন দিয়ে সহজেই রঞ্জিত করা হয় এবং কোহল বা অ্যাসিটোন দিয়ে এই রঞ্জক মুক্ত করা যায় না তাদেরকে গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া বলে । উদাহরণ – Bacillus subtilis ( ব্যাসিলাস সাবটিলিস ) ইত্যাদি ।
গ্রাম নেগেটিভ ( Gram Negative Bacteria )
যেসব ব্যাকটেরিয়ার কোশপ্রাচীর ক্রিস্টাল ভায়ােলেট জাতীয় ক্ষারীয় রঞ্জক ও আয়ােডিন দিয়ে রঞ্জিত করার পরে কোহল বা অ্যাসিটোন দিয়ে সহজেই রঞ্জক মুক্ত করা যায় তাদের গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া বলে । উদাহরণ— salmonella ( সালমোনেলা ) প্রভৃতি । তাছাড়া গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার কোশপর্দা ও প্রাচীরের মধ্যে উৎসেচক ও বিপাকীয় বস্তু জমা হয়ে একটি জেলির মতাে বস্তু তৈরি হয় একে পেরিপ্লাজম বলে ।
গ্রাম পজিটিভ ও গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার পার্থক্য
গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া ও গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার পার্থক্য গুলি হল一
গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া :
1. গ্রাম রঞ্জক বিক্রিয়ায় রঞ্জিত হয় ।
2. এই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কোশপ্রাচীরে 85-90% মিউকোপেপটাইড থাকে ।
3. কোশপ্রাচীর সরল একস্তরী এবং 25-30nm পুরু ।
4. কোশপ্রাচীরে লাইপাে পলিস্যাকারাইড খুব কম থাকে ।
5. টিকোইক অ্যাসিড থাকতে পারে ও না থাকতে পারে ।
6. পেনিসিলিন সংবেদনশীল ।
7. বেশির ভাগ ব্যাকটেরিয়া স্পাের গঠন করে ।
৪. কোশপ্রাচীর পুরু ।
9. পেরিপ্লাজম থাকে না ।
10 . এদের কোশপ্রাচীরে লিপিড থাকে না বলে অ্যালকোহল দিয়ে ধােয়ার সময় অ্যালকোহল রঞ্জিত সাইটোপ্লাজম পর্যন্ত যেতে পারে না । তাই কখনই বর্ণহীন হয় না । উদাহরণ— Bacillus Subtilis ( বেসিলাস সাবটিলিস ) , Lactobacillus lacti ( ল্যাকটোবেসিলাস ল্যাকটি ) প্রভৃতি । 1
গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া :
1. গ্রাম রঞ্জক বিক্রিয়াতে রঞ্জিত হয় না ।
2. এই ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কোশপ্রাচীরে 10-20 % মিউকোপেপটাইড থাকে ।
3. কোশপ্রাচীর জটিল ত্রিস্তরী এবং 10-15nm পুরু ।
4. কোশপ্রাচীরে লাইপোপলিস্যাকারাইড বেশি থাকে ।
5. টিকোইক অ্যাসিড থাকে না ।
6. পেনিসিলিন সংবেদনশীল নয় ।
7. এরা সাধারণ স্পাের গঠন করে না ।
৪. কোশপ্রাচীর অপেক্ষাকৃত কম পুরু ।
9. পেরিপ্লাজম থাকে ।
10. কোশপ্রাচীরে লিপিড থাকে বলে অ্যালকোহল খুব সহজে কোশের ভেতরে যায় এবং রঞ্জক পদার্থ অ্যালকোহলের সঙ্গে মিশে কোশের বাইরে চলে আসে , ফলে কোশ বর্ণহীন হয় । উদাহরণ— Salmonella typhi ( সালমোনেলা টাইফি ) , Escherichia coli ( এশেরিকিয়া কোলাই ) প্রভৃতি ।