ভাইরাসের গুরুত্ব
ভাইরাসের গুরুত্ব
মানুষ অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদের নানারকম রােগ সৃষ্টিকারী জীবাণু হিসাবে ভাইরাসের গুরুত্ব অপরিসীম । জিন সংক্রান্ত গবেষণায় ও ভাইরাস নানা ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে । আজকাল ‘ ভাইরোলজি ’ ( Virology ) একটি জীব বিজ্ঞানের স্বতন্ত্র শাখা । ভাইরাস নানাভাবে আমাদের উপকারে আসে , যেমন —
শিল্পে — রােগ প্রতিরােধক টিকা ভ্যাকসিন উৎপাদন শিল্পে ভাইরাসের অবদান অপরিসীম । গুটি বসন্ত , পোলিও , জলাতঙ্ক , হাম , মাম্পস , এনসেফালাইটিস প্রভৃতি রােগের টিকা তৈরিতে ভাইরাসের বিশেষ প্রয়ােজন । আজকাল ভাইরাস থেকে বহু রােগ প্রতিরােধী ওষুধ তৈরি করার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে ।
অভিব্যক্তিতে — জড় ও জীবের উভয় বৈশিষ্ট্য যুক্ত হওয়ায় ভাইরাস জড় ও জীবজগতের সংযােগ রক্ষা করছে । এদের সাহায্যে জীবের সৃষ্টি , অভিব্যক্তি ও তার ক্রমবিকাশের গতিপথ নির্ধারণ করা গিয়েছে ।
জৈবিক নিয়ন্ত্রণে — বিশেষ ভাইরাস ব্যবহার করে ফসলের পক্ষে বহু ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ দমন করা গিয়েছে ।
রােগ নিরাময়ে — ব্যাকটেরিওফাজ রােগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে রােগ নিরাময় করে ।
গবেষণায় — ( i ) পরীক্ষামূলক গবেষণায় ভাইরােলজি আণবিক জীববিজ্ঞানে ( Molecular Biology ) একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে । জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং -এ কতকগুলি ভাইরাস ব্যবহার করে উন্নতমানের উদ্ভিদ ও জিনের ত্রুটি সংশােধন করে বংশগত রােগ নিরাময় করা সম্ভব হচ্ছে ।
( ii ) জিন সংক্রান্ত গবেষণায় ভাইরাসের ব্যবহার বিশেষ উল্লেখযােগ্য ভূমিকা পালন করছে ।
( iii ) যে জিনের প্রভাবে পােষক কোশে ক্যানসারের লক্ষণ দেখা যায় তাকে অংকোজিন বলে । অংকোজিন কোশ বিভাজনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে নষ্ট করে এবং অনিয়ন্ত্রিত কোশ বিভাজনের জন্য ক্যানসার রােগের লক্ষণ দেখা দেয় । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গবেষণাগারে ক্যানসার রােগের নিয়ন্ত্রণের জন্য ভাইরাসের উপর বিভিন্ন পরীক্ষা চালানাে হচ্ছে ।