জীবন বিজ্ঞান

লাইসোজেনিক চক্র

লাইসোজেনিক চক্র

Screenshot 2021 05 13 2015 457844 Jibabidya1 pdf1
লাইসোজেনিক চক্র

ভাইরাসের জনন প্রক্রিয়া কেবলমাত্র পােষক কোশের মধ্যে ঘটে । স্বাধীনভাবে দেহ গঠন ও বিপাকীয় কাজ পরিচালনা করার মতাে কোনাে উৎসেচক ভাইরাসের দেহে থাকে না । তাই ভাইরাস পােষক দেহে ঢােকার পর কোশ বিভাজন না করে নিজ নিজ আকৃতির প্রতিরূপ ( Replica ) গঠন করে বংশ বৃদ্ধি করে । পােষক কোশে প্রবেশ করার পদ্ধতি ভাইরাসের উদ্ভিদ , প্রাণী ও ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের হয় । উদ্ভিদ ভাইরাস বাহক বা ভেক্টরের ( সাধারণত পতঙ্গ ) সাহায্যে পােষক দেহে প্রবেশ করে । প্রাণী ভাইরাস প্রথম পােষক কোশ আবরণীতে আবদ্ধ হয় ( Adsorption ) ও পরে ফ্যাগোসাইটোসিস ( Phagocytosis ) পদ্ধতিতে কোশে প্রবেশ করে । উদ্ভিদ ও প্রাণী ভাইরাসে সম্পূর্ণ নিউক্লিক অ্যাসিড অংশ পােষক কোশে প্রবেশ করে । 

Escherichia coli ( এসচিরিচিয়া কোলাই ) ব্যাকটেরিয়ার দেহে ফাজ ভাইরাস কীভাবে জনন প্রক্রিয়া শেষ করে তার সঠিক বিবরণ থেকে দেখা যায় এদের জীবন চক্র দু’রকমের হয় , যেমন – লাইটিক চক্র এবং লাইসোজেনিক চক্র 

লাইসোজেনিক চক্রের সংজ্ঞা ( Definition of Lysogenic cycle ) 

ল্যামডা ফাজ এসচিরিচিয়া কোলাই ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করলে কাজের DNA ব্যাকটেরিয়া DNA- এর সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে নতুন জিনােমটি বারবার বিভাজিত হয়ে অপত্য ব্যাকটেরিয়ায় সঞ্চারিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে লাইসোজেনিক চক্র বলে । 

এসচিরিচিয়া কোলাই ব্যাকটেরিয়াকে ল্যামডা ফাজ ( λ – phage ) আক্রমণ করে এবং ভাইরাসের পুচ্ছতন্তু ও কাঁটার অগ্ৰপ্ৰান্ত দিয়ে ব্যাকটেরিয়ার কোশের সঙ্গে সংলগ্ন হয় । লাইটিক চক্রের মতাে একই ভাবে DNA ব্যাকটেরিয়ার কোশে প্রবেশ করে । এর পর ভাইরাসের DNA ব্যাকটেরিয়ার DNA এর সঙ্গে যুক্ত হয় । একে প্রোফাজ ( Prophage ) বলে । এর পর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মিলিত নতুন জিনােমটি বারবার বিভাজিত হয়ে অপত্য ব্যাকটেরিয়ায় সঞ্চারিত হয় অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া বংশ বৃদ্ধি করতে থাকলে অপত্য ব্যাকটেরিয়ার জিনােমর সঙ্গে ভাইরাসের জিনােম সংযুক্ত থাকে । এদের টেমপারেট ফাজ ( Temperate phage ) বলে । এই জীবন চক্রকে লাইসোজেনিক চক্র বলা হয় । 

প্রােফাজ অযথা দীর্ঘস্থায়ী হয় না । কিছুদিন পর হঠাৎ ভাইরাসের DNA পােষকের DNA থেকে বিচ্ছিন্ন হয় এবং সাইটোপ্লাজমে যুক্ত হয়ে আবার লাইটিক চক্রে ফিরে আসে অর্থাৎ আবার পােষকের দেহে অসংখ্য অপত্য গঠন করে ব্যাকটেরিয়ার প্রাচীর বিদীর্ণ করে বা লাইসিস প্রক্রিয়ায় মুক্তি পেয়ে আবার নতুন ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!