জীবন বিজ্ঞান

রেডিও আইসোটোপ কাকে বলে

Contents

রেডিও আইসোটোপ কাকে বলে

images 8
রেডিও আইসোটোপ কাকে বলে

আইসােটোপ হচ্ছে সে সকল রাসায়নিক মৌল উপাদান যাদের পারমাণবিক সংখ্যা ( atomic number ) সমান ( অর্থাৎ তাদের নিউক্লিয়াসের প্রােটনের সংখ্যা সমান ) তবে পারমানবিক ওজন ( atomic massess ) অর্থাৎ প্রােটন এবং নিউট্রনের যুগ্ম সংখ্যা অসমান । কোনাে কোনাে আইসােটোপ অস্থিতিশীল ( unstable ) হয়ে থাকে । অর্থাৎ এদের নিউক্লিয়াসের মধ্যে পরিবর্তন ঘটে থাকে । এর ফলে এই আইসােটোপ থেকে কিছু কণা বিচ্ছুরিত হয় এবং কখনাে কখনাে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ( electromagnetic ) রশ্মি বিচ্ছুরিত হয়ে থাকে । এই প্রকার আইসােটোপদের রেডিও আইসোটোপ ( radio isotope ) বলা হয় । 

সাধারণত জীবেরা কোনাে মৌলের স্থায়ী ( stable ) এবং অস্থায়ী ( unstable ) বা রেডিও অ্যাকটিভ অবস্থা পৃথক করে বুঝতে পারে না । সুতরাং মৌলটি দুটি অবস্থাতেই জীবদেহে একই পদ্ধতিতে বিপাকে অংশ নিয়ে থাকে । এ কারণে জীব বিজ্ঞানীরা মৌলটিকে রেডিও আইসোটোপ রূপে জীবদেহে প্রবেশ করিয়ে বিপাক ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে থাকেন । এ কারণে রেডিও আইসোটোপদের ট্রেসার ( tracer ) হিসাবে ব্যবহার করা হয় । 

রেডিও আইসোটোপের ব্যবহার ( Application of some radio isotopes )  

32p  আইসোটোপ  :  

32p  আইসোটোপ ফসফোরাসের ( phosphorus ) রেডিও আইসােটোপ হিসাবে ব্যবহৃত হয় । নিউক্লিক অ্যাসিড এবং ফসফোলিপিডের বিপাক কার্য পর্যবেক্ষণ করতে এই আইসােটোপ ব্যবহৃত হয় । জীববিজ্ঞানী হার্সে ( A.D. Harshe ) এবং চেজ ( M. W. Chase ) T2 ব্যাকটেরিওফাজকে ( ব্যাকটেরিয়া আক্রমণকারী একপ্রকার ভাইরাস ) 32p এবং 35s আইসােটোপ দিয়ে চিহ্নিত করে প্রমাণ করেছিলেন যে DNA -ই প্রকৃত জিনেটিক উপাদান কারণ 32p ভাইরাসের DNA- র সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যাকটেরিয়ার কোশে প্রবেশ করেছিল এবং সেখানে 32p যুক্ত নতুন DNA তৈরি করেছিল । এই পরীক্ষায় 32p ট্রেসার হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল ।

14c আইসোটোপ : 

এটি কার্বনের ( carbon ) রেডিও আইসােটোপ । যেকোনাে জৈব যৌগের কার্যকারিতা নির্ণয়ের জন্য এই রেডিও আইসােটোপ ব্যবহৃত হয় । অটোরেডিওগ্রাফি ( autoradiography ) পরীক্ষায় 14c ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় । এই রেডিও আইসােটোপ থেকে β কণা বিচ্ছুরিত হয় । এই আইসােটোপের জৈবিক অর্ধ জীবন 180 দিন এবং কার্যকরী অর্ধ জীবন ও 180 দিন । তবে ভৌতিক অর্ধ জীবন 5570 বছর । জীবদেহে এবং জীবাশ্মে উপস্থিত 14c এর পরিমাণ নির্ণয়ের মাধ্যমে এদের বয়স নির্ধারণ করার পদ্ধতিকে রেডিও কার্বন ডেটিং ( Radiocarbon dating ) বলা হয় । 

জেনে রাখা ভালাে 

অটোরেডিওগ্রাফি ( autoradiography ) একপ্রকার পরীক্ষা পদ্ধতি । এতে জৈব বস্তুকে রেডিও আইসােটোপের মধ্যে নির্দিষ্ট সময় রেখে পরে অটোরেডিওগ্রাফি ইমালসনের সাহায্যে আবৃত করা হয় । কিছুদিন ইনকুবেশনের ( incubation ) পরে জৈববস্তু সমেত স্লাইডটি ডেভেলাপ করে নির্দিষ্ট রঞ্জক দিয়ে রঞ্জিত করে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে দেখলে β কণাগুলিকে কালাে দানা হিসাবে দেখা যায় । এ থেকে জীববিজ্ঞানীরা আইসােটোপের ব্যবহারের ফলে জৈব বস্তুর কী পরিবর্তন হয়েছে তা জানতে পারেন । এখানে উল্লেখিত আইসােটোপগুলি ছাড়াও 3H থাইমিডিনের ব্যপক ব্যবহার হয়ে থাকে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!