ভূগোল

বায়ু দূষণের কারণ ও ফলাফল

Contents

বায়ু দূষণের কারণ ও ফলাফল

9d7d03de 5f5a 4358 9cea cee788d2f531
বায়ু দূষণের কারণ ও ফলাফল

বায়ুতে বিভিন্ন উপাদানের উপস্থিতি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কম বা বেশি হলে পরিবেশ তথা জীবজগতের ওপর তার কুপ্রভাব পড়ে । এইরূপ অবস্থায় বায়ুকে দূষিত বায়ু বলে । 

বায়ু দূষণের কারণ

বায়ু দূষণের প্রাকৃতিক কারণ বা উৎস অপেক্ষা মানুষের তৈরি কারণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ , কেননা একমাত্র মানুষের কাজের ফলেই দূষণের মাত্রা অনেক বেশি হয় । প্রকৃতি দূষণ ঘটালে তা ভারসাম্য অবস্থায় ফিরে আসতে বেশি সময় লাগে না , কিন্তু মানুষের জন্য বায়ু দূষণ ঘটলে তা খুব সহজে ভারসাম্যে আসতে পারে না । 

যেসব দূষক বায়ুর দূষণ ঘটায় সেগুলি হল কার্বন ডাই অক্সাইড , কার্বন মনােক্সাইড , সালফার ডাই অক্সাইড , নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড , নাইট্রোজেন মনােক্সাইড , ভাসমান বস্তুকণা ( ধুলােবালি , ছাই , লবণকণা , পরাগরেণু ) , সালফিউরিক অ্যাসিড , অম্ল বৃষ্টি বা অ্যাসিড বৃষ্টি ইত্যাদি । 

বায়ু দূষণের কারণগুলিকে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট — এই দুভাগে ভাগ করা হয় । 

বায়ু দূষণের প্রাকৃতিক কারণ

বায়ু দূষণের প্রাকৃতিক কারণ গুলি হল—

অগ্ন্যুৎপাত : 

অগ্ন্যুৎপাত শুরু হলে আগ্নেয়গিরি থেকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ( HCL ) , সালফার ডাই অক্সাইড ( SO2 ) , হাইড্রোজেন সালফাইড ( H₂S ) , বোরিক অ্যাসিড ( H3BO3 ) , ফসফরাস ( P ) প্রভৃতি গ্যাস এবং ধুলাে , ছাই , ধোঁয়া প্রভৃতি নির্গত হয়ে বাতাসকে দূষিত করে ।

দাবানল : 

দাবানলের সময় পােড়া গাছপালার ছাই , কার্বন মনােক্সাইড , নাইট্রোজেন অক্সাইড প্রভৃতি বাতাসে মিশে দূষণ ঘটায় ।  

বাষ্পমোচন ও বাষ্পীভবন : 

উদ্ভিদ ও মাটি থেকে অতিরিক্ত বাষ্পমােচন ঘটলে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যায় । এ ছাড়া সমুদ্র ও লবণাক্ত হ্রদগুলি থেকে বাষ্পীভবনের ফলে লবণকণা বাতাসে মিশে বায়ুদূষণ ঘটায় । 

উদ্ভিদ : 

ফুলের পরাগরেণু , অ্যালগি ও ছত্রাক একত্রে বাতাসকে দূষিত করে । 

ধূলিঝড় : 

প্রবল ঝড়ে বিস্তীর্ণ প্রান্তর , মরুভূমি প্রভৃতি স্থান থেকে ধুলােবালি উড়তে থাকে । এগুলি দীর্ঘদিন বাতাসে ভাসমান থেকে দূষণ ঘটায় । 

জৈব পদার্থের পচন : 

জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা মৃত জীবদেহের পচন শুরু হলে অনেক বিষাক্ত গ্যাস , যেমন মিথেন , হাইড্রোজেন সালফাইড উৎপন্ন হয় যা বায়ুকে দূষিত করে । 

মহাজাগতিক বস্তু : 

মহাশূন্য থেকে ছুটে আসা উল্কাপিণ্ড , গ্রহাণুপুঞ্জের ধূলিকণা প্রভৃতি বাতাসকে দূষিত করে ।

বায়ু দূষণের অপ্রাকৃতিক বা মনুষ্যসৃষ্ট কারণ : 

( i ) কলকারখানা ; ( ii ) খনিজ তেল শােধনাগার ; ( iii ) যানবাহন ; ( iv ) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রভৃতি থেকে নির্গত বিপুল পরিমাণে দূষিত গ্যাস , ছাই , ধোঁয়া প্রভৃতি ; ( v ) পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র থেকে নির্গত তেজস্ক্রিয় রশ্মি ও দূষিত গ্যাস ; ( vi ) খনি থেকে নির্গত ধূলিকণা ; ( vii ) ঠান্ডা মেশিনে ব্যবহৃত ক্লোরােফ্লুরাে কার্বন গ্যাস ; ( viii ) গৃহস্থালির জ্বালানি ; ( ix ) বিমান ; ( x ) কৃষি বর্জ্য পদার্থ এবং ( xi ) শহরাঞ্চলের আবর্জনা থেকে বিভিন্ন প্রকার দূষিত গ্যাস নির্গত হয়ে বায়ু দূষণ ঘটায় । 

বায়ু দূষণের ফলাফল

বায়ু দূষণের ফলে পরিবেশের সমূহ ক্ষতি হয় এবং মানুষের শরীর স্বাস্থ্যের ওপর নানারূপ ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় । যেমন— 

গ্রিনহাউস এফেক্ট : 

বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে গেলে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতাও বৃদ্ধি পায় , একেই বলে গ্রিনহাউস এফেক্ট । বিজ্ঞানীদের মতে , এইভাবে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বেড়ে গেলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করবে , ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে উপকূলবর্তী নীচু অঞ্চল সমূহ সমুদ্রজলে প্লাবিত হবে এবং বাংলাদেশের মতাে নিম্ন সমতলভূমি সমূহ সমুদ্রে নিমজ্জিত হবে । শুধু তাই নয় , উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে মরুভূমির আয়তন বাড়বে এবং বৃষ্টিপাতও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে । এর ফলে সারা বিশ্ব জুড়ে কৃষিকাজ , শিল্পকর্ম ইত্যাদি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে । 

অ্যাসিড বৃষ্টি : 

বায়ুমণ্ডলে ভাসমান সালফিউরিক অ্যাসিড , নাইট্রিক অ্যাসিড প্রভৃতি রাসায়নিক পদার্থকণা যখন বেশি মাত্রায় বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশে ভূপৃষ্ঠে পড়ে , তখন তাকে অ্যাসিড বৃষ্টি বলে । কলকারখানা , যানবাহন প্রভৃতি থেকে নির্গত গ্যাস ও ধোঁয়ার মাধ্যমে এইসব রাসায়নিক পদার্থকণা বায়ুমণ্ডলে জমা হয় । এর ফলে যেমন কৃষিকাজ ব্যাহত হয় , তেমনি বনভূমি , মৎস্য সম্পদ ইত্যাদির ব্যাপক ক্ষতি হয় । 

ওজোন স্তরের বিনাশ :

স্ট্রাটোস্ফিয়ারের মধ্যে ওজোন গ্যাসের স্তর থাকায় সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছােতে পারে না । কিন্তু বর্তমানে বায়ুমণ্ডলে ক্লোরোফ্লোরো কার্বন জাতীয় এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান বেড়ে যাওয়ায় ওজোন স্তরের সমূহ ক্ষতি হচ্ছে । এর ফলে উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা আছে । 

মানুষের স্বাস্থ্যের উপর বায়ু দূষণের প্রভাব :

মানুষের শরীর স্বাস্থ্যের ওপর বায়ু দূষণের প্রভাব খুব ক্ষতিকর । যেমন রক্তে অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতা কমে যায় ; মাথাধরা , গা বমি , শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি দেখা দেয় ; চোখ ও গলার ক্ষতি হয় এবং ক্যানসার জাতীয় রােগ সৃষ্টি হয় । 

16 thoughts on “বায়ু দূষণের কারণ ও ফলাফল

  • সবুজ

    সুন্দর

    Reply
  • TOTA BISWAS

    ONEK ONEK DHONNOBAD.
    KARONE ETE AMAR ONEK KAJE LAGECHHE.

    Reply
    • Thank you so much
      It is really help me

      Reply
  • Anonymous

    Thank you so much
    Karon eta Amar khub kaje lega6e

    Reply
  • বাবু আলী গোলদার

    আরো বিস্তারিত জানতে চাই

    Reply
  • Debarghya Bakshi

    Aaro Bistarito Jante Chai Ami 1st Semester

    Reply
  • Riju jana

    Thank you so much

    Reply
  • Sorosi priya Ghosh

    Sir,
    Thank you so much .
    💐💐🌹💐💐

    Reply
  • Sukbar Ali

    Thank you ❤️

    Reply
  • Thank you so much ❤🙏

    Reply
  • Prithwa

    Thank you so much sir😄🙂

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!