নিরক্ষীয় চিরহরিৎ অরণ্য বা ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্যের বৈশিষ্ট্য
Contents
নিরক্ষীয় চিরহরিৎ অরণ্য বা ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্যের বৈশিষ্ট্য

নিরক্ষরেখার উভয়দিকে 10° অক্ষরেখা পর্যন্ত অর্থাৎ 10° উত্তর থেকে 10° দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে নিরক্ষীয় চিরসবুজ অরণ্য লক্ষ করা যায় । নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের চিরসবুজ অরণ্যের উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
বৈচিত্র্যময় প্রজাতি
এই বনভূমি অসংখ্য প্রজাতির গাছে পরিপূর্ণ । এত বেশি সংখ্যক প্রজাতি অন্য কোনাে বনাঞ্চলে দেখা যায় না । এই অরণ্যাঞ্চলে কয়েক হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ জন্মায় ।
উদ্ভিদের দ্রুত বৃদ্ধি
সমস্ত উদ্ভিদ খুব দ্রুত জন্মায় ও দ্রুত বাড়ে । কয়েক দিনের মধ্যে গাছগুলি দু-এক মিটার বেড়ে যায় ।
চিরগােধূলি অঞ্চল
বনভূমি অত্যধিক ঘন এবং জঙ্গলে পরিপূর্ণ । বনভূমি এত ঘন যে , সূর্যালােক মাটি পর্যন্ত পৌঁছােতে পারে না । স্থানে স্থানে দিনের বেলায় যেন রাতের অন্ধকার নেমে আসে । তাই , এই বনাঞ্চলকে চিরগােধূলি অঞ্চল ( Land of Eternal Twilight ) বলে ।
আর্দ্র ও স্যাঁতসেঁতে বনভূমি
এই বনভূমি আর্দ্র ও স্যাঁতসেঁতে , মাটি খুবই নরম । বনের মধ্যে প্রবেশ করা খুবই কষ্টসাধ্য ।
সূর্যালােক লাভের প্রতিযােগিতা
গাছগুলি খুবই লম্বা হয় । সূর্যালােকের জন্য গাছগুলির মধ্যে এক অদৃশ্য প্রতিযােগিতা চলে এবং তারা দ্রুত লম্বা হয় ।
চিরসবুজ অরণ্য
গাছের পাতাগুলি বেশ প্রশস্ত ও লম্বা হয় এবং সারা বছর ধরে সবুজ থাকে । তাই , এই অঞ্চলের বনভূমি চিরহরিৎ অরণ্য নামে পরিচিত ।
চাঁদোয়া সৃষ্টি
গাছগুলি ডালপালা বিস্তার করে গায়ে গায়ে লেগে থাকে এবং খোলা ছাতার মতাে চাঁদোয়া ( canopy ) তৈরি করে ।
দূর্গম অরণ্য
বনভূমির তলদেশ লতাগুল্ম , আগাছা ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ থাকে । ফলে , বনের মধ্যে এক স্থান থেকে অন্যত্র যাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে । এজন্য এই অরণ্য দুর্গম ।
অল্প জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির অনেক গাছের অস্তিত্ব
এই অরণ্যে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পাশাপাশি জন্মায় । প্রতি হেক্টরে প্রায় 20 থেকে 40 টি প্রজাতির গাছ দেখা যায় । এজন্য গাছ নির্বাচন করা এবং তা কেটে ফেলা কষ্টসাধ্য ।
পরগাছার অস্তিত্ব
গাছের শাখাপ্রশাখায় অর্কিড জাতীয় পরগাছা জন্মায় । এক গাছ থেকে অন্য গাছে মােটা কাছির মতাে লতানে গাছ বিস্তৃত হয় । এদের লায়না বলে । এক-একটি লায়না কয়েক কিলােমিটার দীর্ঘ হয় ।