ভারতে খরার কারণ কী
ভারতে খরার কারণ কী

প্রধানত দুটি কারণে ভারতে খরার আবির্ভাব ঘটে —
( ১ ) দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অনিয়মিত ও অনিশ্চিত আচরণ এবং
( ২ ) দ্রুত অরণ্য বিনাশ ।
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অনিয়মিত ও অনিশ্চিত আচরণ
ভারতে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রায় ৮০ শতাংশ বর্ষাকালের চার মাসের ( জুন-সেপ্টেম্বর ) মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে । প্রধানত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবেই এই বৃষ্টিপাত হয় । কিন্তু ( i ) এই মৌসুমি বায়ুর আগমন ও প্রত্যাগমন অনিয়মিত ও অনিশ্চিত । কোনাে বছর এর আগমনে বিলম্ব ঘটে , আবার কোনাে বছর ভারত থেকে দ্রুত ফিরে যায় । উভয় ক্ষেত্রেই খরা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । তাছাড়া ( ii ) বর্ষাকালের চার মাস বৃষ্টিপাতও নিয়মিত হয় না , মাঝে মাঝে বিরতি থাকে । এই বিরতির স্থায়িত্ব খুব বেশি হলে খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় । আবার ( iii ) বর্ষাকালে প্রতি বছর পরিমিত বৃষ্টিপাত হয় না , কোনাে বছর বেশি এবং কোনাে বছর কম হয় । যে বছর স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের চেয়ে ২৫% কম হয় , তাকে স্বল্প খরা বলে । আর ৫০% কম হলে মাঝারি খরা এবং ৭৫% কম হলে তীব্র খরা পরিস্থিতির উদ্ভব হয় ।
দ্রুত অরণ্য বিনাশ
এক সময় ভারতের ভৌগােলিক আয়তনের প্রায় অর্ধেকটাই ( ৫০% ) অরণ্যাবৃত ছিল । কিন্তু নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে এখন দেশের মাত্র ১৯% এলাকা অরণ্যাবৃত । এইভাবে দ্রুতগতিতে অরণ্য ভূমি হ্রাস পাওয়ার ফলেও খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে । কারণ— ( i ) মাটির ওপর গাছপালার আচ্ছাদন না থাকলে রােদের তেজে মাটির জলকণা বাষ্পীভূত হয় । এরফলে যেমন মাটির আর্দ্রতা হ্রাস পায় , তেমন ভৌম জলস্তরও নেমে যায় । এইভাবে খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় । আবার , ( ii ) প্রয়ােজনমতাে গাছপালা থাকলে সবুজ পাতার মাধ্যমে প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বাতাসে জলীয় বাষ্প আসে না । অর্থাৎ তখন বায়ুর আর্দ্রতা কমে যায় । আর শুষ্ক বায়ু মাটির জলকণা শােষণ করে বলে ভূমি খরায় পর্যবসিত হয় ।