ভারতে বন্যার কারণ
ভারতে বন্যার কারণ

ভারতে বন্যা হয় বিভিন্ন কারণে , যেমন—
( ১ ) খামখেয়ালি দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অনিশ্চিত আচরণ : ভারতে বন্যার প্রধান কারণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অনিশ্চিত , অনিয়মিত আচরণ । যেমন— ( i ) কখনও একটানা কয়েক ঘণ্টা মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয় । ফলে বন্যা হয়ে যায় । ( ii ) বৃষ্টিপাত মাঝারি হলেও তা যদি দীর্ঘায়িত হয় , তাহলেও বন্যা হয় । ( iii ) যদি নির্দিষ্ট সময়ের আগে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে এবং তার প্রত্যাগমনেও বিলম্ব হয় , তাহলে বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয় এবং তখন বন্যা হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে ।
( ২ ) পলি জমে নদীর ধারণ ও বহন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া : নদীর বুকে পলি জমে তার জলধারণ ও বহন ক্ষমতা কমে গেলে মাঝারি মাপের বৃষ্টিপাতেও নদীতে বন্যা সৃষ্টি হতে পারে ।
( ৩ ) জলাধার থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়া বর্ষাকালে নদীবাঁধের জলাধারগুলি থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়লে বন্যা হতে পারে ।
( ৪ ) সামুদ্রিক জলােচ্ছাস : প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমুদ্রে জলােচ্ছাস হলে উপকূলবর্তী অঞ্চলসমূহে বন্যা হয় ।
( ৫ ) পার্বত্য অঞ্চলে বর্ষাকালে ধস নেমে নদীর গতিপথ রুদ্ধ হয়ে গেলে যে সাময়িক হ্রদের সৃষ্টি হয় , তাতে জলের পরিমাণ খুব বেশি বেড়ে গেলে , জলের চাপে হঠাৎই গতিপথের বাধা অপসারিত হয় এবং তার ফলে প্রবাহপথের দু-পাশে বন্যা হয় । বিগত শতাব্দীতে এইভাবে তিস্তা নদীতে যে প্রবল বন্যা হয় । তার ফলে দার্জিলিং এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ।
( ৬ ) মরু অঞ্চলে ছােটো ছােটো নালা বা শুষ্ক খালগুলি বালিতে ক্রমাগত ভরাট হয়ে যায় বলে জলনিকাশী ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে থাকে । এজন্য অল্প বৃষ্টিতেই মরু অঞ্চলে বন্যা হয়ে যায় । এছাড়া ( ৭ ) নদীর গতিপথের পরিবর্তন , ( ৮ ) নদীতে হঠাৎ জলের পরিমাণ বৃদ্ধি , প্রভৃতি কারণেও বন্যা হতে পারে ।