ভূগোল

জোয়ার ভাটা সৃষ্টির কারণ

জোয়ার ভাটা সৃষ্টির কারণ

Tide overview.svg
জোয়ার ভাটা সৃষ্টির কারণ

সাগর-মহাসাগরের জলরাশি নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর এক জায়গায় ফুলে ওঠে এবং অন্য জায়গায় নেমে যায় । জলরাশির এই স্ফীতিকে বলে জোয়ার এবং অবনমনকে বলে ভাটা । বিজ্ঞানীদের মতে প্রধানত দুটি কারণে জোয়ার ভাটা সৃষ্টি হয়— 

( ১ ) পৃথিবীর আবর্তন গতি এবং 

( ২ ) পৃথিবীর ওপর চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ । 

পৃথিবীর আবর্তন গতি 

পৃথিবী নিজের মেরুরেখার চারদিকে অনবরত আবর্তন করে চলেছে । এর ফলে ভূপৃষ্ঠে একটি বিকর্ষণ শক্তি — কেন্দ্রাতিগ বলের সৃষ্টি হয় এবং তার প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের জলরাশি বাইরের দিকে বিক্ষিপ্ত হয় । এইভাবে সমুদ্রে জোয়ার সৃষ্টিতে সাহায্য হয় ।

পৃথিবীর ওপর চাঁদ ও সূর্যের আকর্ষণ 

নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অনুসারে এই বিশ্ব‌ ব্রহ্মান্ডের প্রতিটি বস্তুই প্রতিটি বস্তুকে আকর্ষণ করে । সুতরাং গ্রহ , উপগ্রহ , সূর্য প্রভৃতি প্রতিটি জ্যোতিষ্কই পরস্পর পরস্পরকে আকর্ষণ করে । এই হিসেবে চাঁদ ও সূর্য পৃথিবীকে আকর্ষণ করে । তবে সূর্যের তুলনায় পৃথিবীর ওপর চাঁদের আকর্ষণ বল বেশি । কারণ , যদিও চাদের তুলনায় সূর্য প্রায় ২ কোটি ৬০ লক্ষ গুণ বড়াে , কিন্তু পৃথিবী থেকে চাঁদ যত দূরে আছে , সূর্য রয়েছে তার থেকে ৩৮০ গুণ বেশি দূরত্বে । এজন্য জোয়ার ভাটা সৃষ্টির ক্ষেত্রে চাঁদের আকর্ষণ সূর্যের আকর্ষণের প্রায় দ্বিগুণ । তাই প্রধানত চাঁদের আকর্ষণে পৃথিবীর জলরাশি ফুলে ওঠে অর্থাৎ জোয়ার হয়। 

ভূপৃষ্ঠের যে স্থানে চাঁদের আকর্ষণে জোয়ার সৃষ্টি হয় , ঠিক তার বিপরীত দিকের স্থানটিতে অর্থাৎ প্রতিপাদ স্থানেও পৃথিবীর আবর্তনজনিত কেন্দ্রাতিগ বলের প্রভাবে জোয়ার হয় । আর , যে দুটি স্থানে জোয়ার হয় , ঠিক তার সমকাণে অবস্থিত স্থান দুটির জলরাশি সরে যায় বলে সেখানে তখন ভাটা হয় ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!